স্টাফ রির্পোটার : রোহিঙ্গা ইস্যুতে বিএনপির বক্তব্যের তীব্র সমালোচনা করে ওবায়দুল কাদের দলটির উদ্দেশ্য নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। সরকার মিয়ানমারের সঙ্গে যুদ্ধ করবে- এটাই বিএনপির ইচ্ছা কি না, জানতে চেয়েছেন তিনি।
১৫ আগস্ট জাতীয় শোক দিবস স্মরণে বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ মেডিক্যাল এসোসিয়েশন (বিএমএ) মিলনায়তনে আলোচনায় এই প্রশ্ন রাখেন সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী।
২০১৭ সালের আগস্টে প্রাণ বাঁচাতে বাংলাদেশে ছুটে আসা লাখ লাখ রোহিঙ্গা এখনো নিজ দেশে ফিরে যায়নি। দুই বার দিনক্ষণ ঠিক হলেও রোহিঙ্গারা অনড় থাকায় শুরু হয়নি প্রত্যাবাসন। আর মিয়ানমারের ভূমিকা নিয়েও আছে প্রশ্ন। দেশটি রোহিঙ্গাদের কোনো দাবিই মানছে না।
এর মধ্যে বাংলাদেশে অনুপ্রবেশের দুই বছর পূর্তির দিন গত সপ্তাহে কক্সবাজারে বিশাল সমাবেশ করেছে রোহিঙ্গারা। কয়েক লাখ লোকের এই জমায়েতে তারা বলেছে, মিয়ানমারে নাগরিকত্ব পেলেই কেবল তারা ফিরে যাবে। আর জোর করে পাঠানোর চেষ্টা করা হলে পরিস্থিতি ঘোলা হবে।
বিএনপি বলছে, সরকার এই ক্ষেত্রে পুরোপুরি ব্যর্থ। আর এ কারণেই মিয়ানমারকে বাগে আনা যাচ্ছে না।
বিএনপিকে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘শেখ হাসিনা সরকারের পররাষ্ট্রনীতি ঠিকই আছে। মিয়ানমারের ওপর চাপ বাড়ছে আরও বাড়বে। আপনারা কি চান আমরা যুদ্ধ করি। যুদ্ধের ফাঁদে পা দেই?’
‘রোহিঙ্গারা যখন বাংলাদেশ স্রোতের মত আসতে থাকে তখন কিন্তু অনেক উস্কানি ছিল। আমরা উস্কানির ফাঁদে পা দেইনি। আমার যুদ্ধ করে রোহিঙ্গাদের ফেরত পাঠাতে চাই না। আমরা সফল কূটনৈতিকের মাধ্যমে রোহিঙ্গাদের ফেরত পাঠাতে চাই। এই কৌশলে দুই পা এগুলে হয়তো এক পা পেছাতে হয়। আমার আমাদের নীতি পলিসি থেকে এক চুলও নড়িনি। আমার আমাদের টার্গেট সামনে রেখে রোহিঙ্গাদের স্বদেশে ফিরিয়ে দিতে আমরা যত প্রকার চাপ সৃষ্টি করা দরকার করে যাচ্ছি।’
বিএনপির ‘জাতীয় ঐক্যের’ আহ্বানের বিষয়ে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘রোহিঙ্গা ইস্যু নিয়ে আপনারা কথা বলেন। আজকে জাতীয় ঐক্যের নামে বিভেদের পাঁয়তারা করেন। আপনাদের জাতীয় ঐক্য গড়তে হবে না। জাতীয় ঐক্যবদ্ধ আছে।’
রোহিঙ্গা ইস্যু নিয়ে চক্রান্ত- ষড়যন্ত্র আছে দাবি করে সড়কমন্ত্রী বলেন, ‘পাকিস্তানের ইনটেলিজেন্স (গোয়েন্দা) প্রতিনিয়ত আছে। এনজিও লাগিয়ে দিয়েছে৷ এনজিওরা এখনে চক্রান্ত করছে।’
‘মির্জা ফখরুল সাহেব কি এদের সাথে আঁতাত করেছেন? তা নাহলে এত বেসুরে কথা কোনো আপনার মুখ থেকে বের হচ্ছে? দুই বছর ধরে বিএনপি কূটনৈতিকদের কাছে সরকারের বিরুদ্ধে নালিশ করেছে। কিন্তু রোহিঙ্গা ইস্যুতে মিয়ানমারের বিরুদ্ধে একবারও নালিশ করেননি।’
‘বাংলাদেশ ইতিহাসের বিএনপির মত ব্যর্থ কোনো বিরোধী দল আছে বলে আমার জানা নেই। দেশের অনেক বিরোধী দল, বিরোধিতা করছে। কিন্ত বিএনপির মত এত ব্যর্থ, দগদগে ব্যর্থতা আর কোনো দলের নেই। তারা এখন উন্মাদ হয়ে ইস্যু খোঁজে। এখন রোহিঙ্গা ইস্যুতে ভর করেছে।’
বিএমএ সভাপতি মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিনের সভাপতিত্বে আলোচনায় আরও বক্তৃতা করেন আওয়ামী লীগের স্বাস্থ্য ও জনসংখ্যা বিষয়ক সম্পাদক রোকেয়া সুলতানা, সহ-সভাপতি জামাল উদ্দিন খলিফা, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বিএসএমএমইউ) উপ-উপাচার্য শহিদুল্লাহ সিকদার প্রমুখ।