কুদরতে খোদা সবুজ, কুষ্টিয়া প্রতিনিধি : কুষ্টিয়া গড়াই নদ খনন ভেস্তে যেতে বসেছে। খনন করা বালু নদের তীরে ফেলায় বন্যার পানিতে তা নদের ভেতরে চলে যাচ্ছে। এতে নদে পানিপ্রবাহ ফের বাধাগ্রস্ত হওয়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে। জেলা প্রশাসক সৈয়দ বেলাল হোসেন জানান, খনন করা বালু ও মাটি নদের পাড়েই ফেলা হয়েছে। জানতে চাইলে গড়াই নদ পুনরুদ্ধার প্রকল্পের ২য় পর্যায় নির্বাহী প্রকৌশলী সাঈদ আহমদ বলেন, জায়গা না পাওয়ায় নদের পাশেই বালু ফেলা হয়েছিল। শতকরা ১৫-২০ ভাগ বালু পানিতে চলে গেছে। পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) সূত্রে জানা যায়, ৯৪২ কোটি টাকা ব্যয়ে গড়াই নদ পুনরুদ্ধার প্রকল্পের দ্বিতীয় পর্যায় কাজ পায় চীনের চায়না হারবার নামে একটি প্রতিষ্ঠান। ২০১১ সালে দ্বিতীয় পর্যায়ের প্রথম খননকাজ শুরু হয়। গড়াই নদের উৎসমুখ তালবাড়িয়া থেকে কুষ্টিয়ার খোকসা উপজেলা পর্যন্ত ৩০ কিলোমিটার নদীপথ খননের পরিকল্পনা হয়। চলতি বছরের জুনে প্রকল্পের কাজ শেষ হয়েছে। এ বছর শুরুর দিকে জেলা মাসিক সমন্বয় কমিটির সভায় খননে অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ ওঠার পর জেলা প্রশাসক সৈয়দ বেলাল হোসেন খননকাজ সরেজমিন পরিদর্শন করে ৩১ জানুয়ারি পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ সচিবের কাছে প্রতিবেদন আকারে চিঠি দেন। প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, নদ খননকাজে উত্তোলন করা বালু ও মাটি দিয়ে নদের পাড় ও ভাঙন এলাকা ভরাট করে সেখানে চাষাবাদযোগ্য কৃষিজমি সৃষ্টি করা, বৃক্ষরোপণের মাধ্যমে বাগান সৃজন করা ও জনসাধারণের সুবিধার্থে মাঝেমধ্যে ঘাট তৈরি করার কথা থাকলেও তা যথাযথভাবে বাস্তবায়ন করা হয়নি। নদের প্রশস্ততা বৃদ্ধি না করে নদের উভয় পাড়ে বালু ও মাটি ভরাট করে খননকাজ করা হচ্ছে। এতে নদ আগের প্রশস্ততা হারাবে এবং একই সঙ্গে উভয় পাড়ে খননের মাধ্যমে উত্তোলন করা বালু ও মাটি পুনরায় জমা হয়ে নদের নাব্যতাও দীর্ঘ মেয়াদে হ্রাস পাবে বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়। প্রতিবেদনে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন নদী-বিশেষজ্ঞ প্রতিনিধিসহ গড়াই নদের খনন কার্যক্রম সরেজমিন পরীক্ষা-নিরীক্ষাপূর্বক প্রতিবেদন দেওয়ার জন্য একটি বিশেষজ্ঞ দল গঠনের অনুরোধ জানানো হয়েছে। উত্তোলন করা বালুর বড় একটি অংশ নদে চলে গেছে। পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) কুষ্টিার এক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, নদে অপরিকল্পিত খননের কারণে কুষ্টিয়া শহর রক্ষাবাঁধের মঙ্গলবাড়িয়া এলাকায় গ্রোয়েন বাঁধের পূর্ব পাশে প্রায় ৪০ মিটার ও পশ্চিম পাশে প্রায় ১০ মিটার ভেঙে গেছে। সাঈদ আহমদ বলেন, যেটুকু বালু নদে চলে গেছে তাতে কোনো সমস্যা হবে না। নাব্যতা ঠিক রাখতে দীর্ঘমেয়াদি খননের কোনো বিকল্প নেই। এ জন্য প্রতিবছর ১৫-২০ কোটি টাকা খরচ করতে হবে।