নুরনবী সরকার, লালমনিরহাটঃ লালমনিরহাটের হাতীবান্ধা উপজেলার বড়খাতা এলাকায় আব্দুল বাতেন নামে প্রয়াত এক মুক্তিযোদ্ধা পরিবারকে হয়রানীর অভিযোগ উঠেছে।
সোমবার ওই মুক্তিযোদ্ধার স্ত্রী ও বড়খাতা ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক সদস্যা হালিমা খাতুন তার পরিবারকে হয়নারী থেকে প্রতিকারের পাশাপাশি বিচার চেয়ে স্থানীয় সংসদ সদস্য ও হাতীবান্ধা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাসহ বিভিন্ন দপ্তরে লিখিত অভিযোগ করেছেন।
প্রাপ্ত অভিযোগে মুক্তিযোদ্ধার স্ত্রী হালিমা খাতুন উল্লেখ করেন, তার মেজো ছেলে হাসমত উল্লাহ্ হাসু স্থানীয় দোলাপাড়া কমিউনিটি ক্লিনিকে সিএইচসিপি পদে কর্মরত আছেন। ওই ক্লিনিকের সভাপতির দায়িত্বে রয়েছেন বড়খাতা ইউনিয়ন পরিষদ সদস্য হাফিজুল ইসলাম। উক্ত ক্লিনিক সভাপতি ঔষধ সিসিতে সরবরাহ নাই এমন ঔষধ চেয়ে প্রায় সময়ই তার ছেলের সাথে রাগারাগি করেন ও ঔষধ চুরি করে বিক্রি করে বলে কথিত অভিযোগ তুলেন। গত ১১ অক্টোবর ক্লিনিকের একটি বিষয়ে তার ছেলে ওই ক্লিনিক সভাপতি ও ইউপি সদস্য হাফিজুল ইসলামকে অবগত করতে ফোন করেন।
হালিমা খাতুন জানান, উক্ত ইউপি সদস্যকে ফোনে না পেয়ে রাত সাড়ে ১০ টার দিকে বড়খাতা বাজারে তার সাথে দেখা করে ক্লিনিকের বিষয়টি অবগত করা মাত্রই ইউপি সদস্য হাফিজুল ইসলাম তার ছেলের উপর ক্ষিপ্ত হয়ে উঠেন। ওই সময় উক্ত ইউপি সদস্য তার প্রয়াত স্বামী বীর মুক্তিযোদ্ধা ও বড়খাতা ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক সদস্য আব্দুল বাতেনকে গম-চাল চোর বলে গালি গালাজ করেন। তার ছেলে এর প্রতিবাদ করলে সু-কৌশলে উক্ত ইউপি সদস্য বড়খাতা ইউনিয়ন চেয়ারম্যান আবু হেনা মোস্তফা জামাল সোহেলকে ফোন করে তার ছেলের বিরুদ্ধে নালিশ দেন।
তিনি অভিযেগে বলেন, পরবর্তীতে ওই চেয়ারম্যানের নির্দেশে ইউপি সদস্য হাফিজুল ইসলাম তার ছেলে হাসুকে ধাক্কাধাক্কি করে নিজের মোটর সাইকেলটি ফেলে দিয়ে চলে যায়। পরবর্তীতে স্থানীয় লোকজন মোটর সাইকেলটি উদ্ধার করে সংসদ সদস্য ও সাবেক প্রতিমন্ত্রী মোতাহার হোসেনের বাড়িতে জমা রাখেন। কিন্তু পুরো বিষয়টি ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করার চেষ্টায় তার ছেলে হাসুর বিরুদ্ধে হাতীবান্ধা থানায় একটি মিথ্যা মামলা দায়ের করেন। ওই মামলা থেকে হাসু আদালতে আতœসমর্পন করে জামিন হওয়ার পরেও তাদের পরিবারকে পুলিশি হয়রানী করা হচ্ছে।
মুক্তিযোদ্ধার স্ত্রী হালিমা খাতুন অভিযোগে উল্লেখ করেন, বড়খাতা ইউনিয়ন চেয়ারম্যান সেহেল ও সদস্য হাফিজুলসহ একটি মহল তার পরিবারের বিরুদ্ধে গভীর ষড়যন্ত্র করছে। পুরো বিষয়টি তদন্ত পূর্বক মুক্তিযোদ্ধা পরিবারকে হয়রানী থেকে বাঁচাতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানান মুক্তিযোদ্ধার স্ত্রী ও সাবেক ইউপি সদস্যা হালিমা খাতুন তার আবেদনে।
গত সোমবার এ বিষয়ে উক্ত মুক্তিযোদ্ধার স্ত্রী ও বড়খাতা ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক সদস্যা হালিমা খাতুন স্থানীয় সংসদ সদস্য মোতাহার হোসেন, লালমনিরহাট জেলা প্রশাসক, লালমনিরহাট পুলিশ সুপার, জেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার, হাতীবান্ধা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার, হাতীবান্ধা থানার ওসি ও স্থানীয় প্রেসক্লাবে অভিযোগে করেন।
বড়খাতা ইউনিয়ন চেয়ারম্যান আবু হেনা মোস্তফা জামাল সোহেল বলেন, অভিযোগ করার অধিকার সবার আছে। প্রকাশ্যে ইউ-পি সদস্যকে মারধর করে তারাই যদি উল্টো বিচার চায় তাহলে আমার কিছু বলার নেই। ইউ-পি সদস্যকে মারধরের ঘটনার হাজার হাজার সাক্ষী আছে। সত্য কখনোই গোপন থাকে না। আমি শুধু উর্ধতন জন প্রতিনিধি ও কর্মকর্তাদের কাছে সড়ে জমিন তদন্ত করে বিচার দাবী করছি। দেরীতে হলেও সত্যের জয় একদিন হবেই।
হাতীবান্ধা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আমিনুল ইসলাম বলেন, আমি এ সংক্রান্ত একটি অভিযোগ পেয়েছি। প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে পুলিশকে নিদের্শ দেয়া হয়েছে। এ ছাড়া ওই মুক্তিযোদ্ধা পরিবারকে আদালতের আশ্রয় নিতে বলা হয়েছে।