ছাদেকুল ইসলাম রুবেল, গাইবান্ধা ঃ পঞ্চাশ বছরের এ সংসার জীবনে মেহেরন নেছা জাকলী আজও তার বাবা মাকে খুঁজে পায়নি। তৃষ্ণার্ত দুটি চোখ আজও খুঁজে ফেরে ৪৪ বছর আগে হারিয়ে যাওয়া বাবা-মা ভাই বোনদের। স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় কুচবিহারের দিনহাটা স্মরনার্থী ক্যাম্পে হারিয়ে যায় জাকলী। হারিয়ে যাওয়া সাত বছরের শিশু জাকলীকে নিয়ে আসে মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক পীরগঞ্জ উপজেলার আওয়ামী লীগ নেতা এডভোকেট গাজী রহমান। তার বাসায় স্থান জোটে কাজের ঝি হিসেবে। সেখানেই বড় হয়ে ওঠে জাকলী। এক সময় যৌবনে পা দেয়। গাজী রহমান নিজেই সাদুল্যাপুর থানার ঘ্যাগার বাজার এলাকার দুলা নামের এক যুবকের সাথে বিয়ে দেন। সেখানে ৬ জন পুত্র কন্যার জনক হয় এ জুটি। ভাগ্যের পরিহাসে জাকলীর স্বামী এক সময় গত হবার পর বাস্তুভিটে টুকুও দখল করে নেয় স্বামীর ছোট ভাই ফূল মিয়া। সন্তানদেন নিয়ে তাই ফিরে আসে জাকলী। গাজী রহমানের বাড়ির ভিটের এক পাশে ছোট্ট একটি ঘর তুলে সন্তানদের নিয়ে বসবাস শুরু করে। বিয়ে হবার পর প্রতিটি সন্তান আলাদা হয়ে যায়। এদিকে কয়েক বছর পুর্বে গাজী রহমান পরলোকগমন করেন। তিনি গত হবার পর তার তার পরিবার পরিজনদের করুনা জোটেনি জাকলীর ভগ্যে। তাই আশ্রয়টুকু ভেঙ্গে নিয়ে যেতে হয় মহাসড়কের পাশে ইক্ষু ক্রয় কেন্দ্রের পরিত্যক্ত ভবনের একটি কক্ষে। বর্তমানে সেখানে থেকে সে ভিক্ষে করে জীবিকা নির্বাহ করে। শিশুকালের কোন কথা স্মরন নেই জাকলীর। শুধু এটুকু মনে করতে পারে- তার বাবার নাম তমিজ মেকার, মার নাম নছিমন, কুচবিহার দিনহাটা এলাকায় থানার পাশেই তাদের বাড়ি ছিল। ১ ভাই ১ বোন এদের নাম মনে নেই তার। পঞ্চাশ বছরের এই জীবনে জাকলীর অনেক চড়াই উৎরাই গেছে। নানা প্রতিকুলতার সাথে লড়াই করতে হয়েছে। দু:খ বেদনা হাসী কান্না অনেক স্মৃতি জড়িয়ে আছে এই জীবনে। হারিয়ে যাওয়া বাবা মা কোথায় ? ভাই বোন, তারাই বা কোথায় ? বেঁচে আছে নাকি মরে গেছে ? ওদের কথা মনে হলে বুকের ভিতরটা ব্যথায় চিনচিন করে ওঠে। ছুটে যেতে ইচ্ছে করে তাদের কাছে। কিন্তু কি করে তা সম্ভব? স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় যে শিশুটি হারিয়ে গেছে, দীর্ঘ পঞ্চাশ বছরেও তার ভাগ্যে একটা সনদ পর্যন্ত জোটেনি। আজও জোটেনি তার নামে কোন বিধবা ভাতা বা বয়স্ক ভাতার কার্ড। সমাজের বড় বড় নেতা আর কর্তা ব্যক্তি কারো নজরেই পড়েনি সে। জাকলীরা তাই আমাদের সমাজে চির অবহেলিতই থেকে যায় বরাবর।পীরগঞ্জ বিজ্ঞান ও কারিগরি কলেজের অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে দুর্নীতি অভিযোগ উপজেলা সদরের প্রাণকেন্দ্রে পীরগঞ্জ বিজ্ঞান ও কারিগরি কলেজের অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে শিক্ষার্থীদের নিকট হতে অতিরিক্ত অর্থ আদায়সহ নানা দুর্নীতি অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। আজ বুধবার দুপুরে কলেজের শিক্ষার্থীরা এ ঘটনার প্রতিকারের দাবিতে উপজেলা সদরে বিক্ষোভ প্রদর্শনসহ ওই কলেজ পরিচালনা কমিটির সভাপতি ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার রফিকুল হকের কাছে অভিযোগ করেছে।অভিযোগে জানানো হয়, ওই কলেজে পৃথক ৫ টি ট্রেডে ৪০ জন করে মোট ২০০ করে দুই শিক্ষা বর্ষে ৪০০ শিক্ষার্থী রয়েছে। প্রত্যেক শিক্ষার্থীর কাছে রেজিষ্ট্রেশন বাবদ মাত্র ১০০ টাকার স্থলে বাধ্যতামুলক ৫০০ টাকা হারে আদায় করা হয়েছে। ১ম, ২য় ও তৃতীয় সাময়ীকি পরীক্ষার সময়ও প্রত্যেক পরীক্ষার ফি বাবদ ৫০০ টাকা হারে আদায় করা হয়েছে বাধ্যতামুলক। অথচ অন্যান্য কারিগরি কলেজে এসব পরীক্ষার ফি মাত্র ১৫০ টাকা। এছাড়া কলেজে পড়ালেখার কোন পরিবেশ নেই, মেঝে কাঁচা ও স্যাতস্যাতে। পর্যাপ্ত ফ্যান নেই, প্রচন্ড গরমে শিক্ষার্থীদের প্রাণ ওষ্ঠাগত হয়ে পড়ে। বিশ্রামাগার নেই, বিনোদনের কোন বালাই নেই। প্রয়োজনীয় সংখ্যক পয়:প্রণালীরও কোন ব্যাবস্থা নেই। অভিযুক্ত অধ্যক্ষ খলিলুর রহমান রংপুর জেলা সদরে সপরিবারে বসবাস করেন। তিনি সদ্যক্রয়কৃত মূল্যবান কারযোগে রংপুর হতে কলেজে যাতায়াত করেন। তার ব্যাক্তিগত আচরনে শিক্ষক কর্মচারি ও শিক্ষার্থীরা রুষ্ট।