ইন্টারন্যাশনাল ডেস্ক : বিশ্বের জীবিত বিজ্ঞানীদের মধ্যে শ্রেষ্ঠ হিসেবে বিবেচিত স্টিফেন হকিংয়ের বক্তব্য নিয়ে স্বেচ্ছামৃত্যুর অধিকারবাদীদের মধ্যে তীব্র বিভক্তি শুরু হয়েছে। মেধাবী তাত্ত্বিক পদার্থবিদ হকিং ২৩ বছর ধরে লাইফ সাপোর্টে রয়েছেন। তিনি স্বেচ্ছামৃত্যুর অধিকারের পক্ষে বক্তব্য রাখায় বিষয়টি নিয়ে নতুন করে বিতর্ক শুরু হয়।
হকিং বলেন, যারা রোগে ভুগে শেষ পর্যায়ে রয়েছে এবং যাদের নিরাময়ের সম্ভাবনা নেই, রোগ যন্ত্রণা থেকে রেহাই পেতে তাদের স্বেচ্ছামৃত্যুর অধিকার থাকা উচিত।
বিবিসিকে এক সাক্ষাতকারে তিনি বলেন, ‘আমরা পশুদের দুর্ভোগ পোহাতে দেই না। তাহলে মানুষ কেন এ সুযোগ পাবে না।’ তবে তিনি এ কথাও বলেন, এ বিষয়ে পর্যাপ্ত সুরক্ষা ব্যবস্থা থাকতে হবে। কাউকে তার ইচ্ছার বিরদ্ধে এটা গ্রহণ করতে দেয়া হবে না।
স্টিফেন হকিং বলেন, সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি সত্যিকারভাবেই তার জীবনের অবসান ঘটাতে চান এবং এ ব্যাপারে তার ওপর কোনো চাপ নেই। তিনি স্বেচ্ছায়ই এটা চাইছেন। বিষয়টি এমন হতে হবে।
এ ক্ষেত্রে পক্ষাবলম্বনকারীরা বলছেন, স্বেচ্ছামৃত্যু নিয়ে হকিং তার পূর্ববর্তী অবস্থান পরিবর্তন করায় যুক্তরাষ্ট্রে চিকিৎসকের সহায়তায় এটা কার্যকর করার বিষয়ে গ্রহণযোগ্যতা আরো বাড়তে পারে।
কিন্তু বিশিষ্ট প্রতিবন্ধী গ্রুপ অরেগন,ওয়াশিংটন স্টেট ও মনটানার স্বেচ্ছামৃত্যু সংক্রান্ত অনুকূল আইনের বিরোধিতা করে বলেছেন, হকিংয়ের কথাকে লাখ লাখ মার্কিন প্রতিবন্ধীর জন্য জয়ের বিষয় হিসেবে গণ্য করা ঠিক হবে না। মার্কিন প্রতিবন্ধিরা বলছে, ‘’আত্মহত্যা’ আইনসিদ্ধ হলে তাদের জীবন ঝুঁকিপূর্ণ করে তুলবে। হকিংয়ের বর্তমান বয়স ৭১বছর। ‘এ ব্রিফ হিস্টরি অব টাইম’ বই লিখে বিশ্বব্যাপী খ্যাতি অর্জনকারী এই বিজ্ঞানী এক সময় বলেছিলেন, চিকিৎসকের সহায়তায় স্বেচ্ছামৃত্যু ঠিক নয়।
তিনি ১৯৮৫ সালে তার নিজের জীবনের ঘটনা তুলে ধরে বলেছিলেন, তার তখন নিউমোনিয়া হয়ে অবস্থা শোচনীয় হয়ে পড়লে ডাক্তাররা তার প্রথম স্ত্রীকে জীবন রক্ষাকারী মেশিন খুলে ফেলার সুযোগ দিয়েছিলেন। সূত্র: বিবিসি, দ্য গার্ডিয়ান