বেনাপোল প্রতিনিধি : স্কুল ড্রেস না পড়ে স্কুলে আসায় যশোরের শার্শা উপজেলা সরকারি মডেল পাইলট মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মেহেদী হাসান সাগর (১৫) নামের এক ছাত্রকে পিটিয়ে জখম করেছে। এ ঘটনায় উপজেলা নির্বাহী অফিসার ৩ সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেন।
মেহেদী ইটভাটায় কর্মরত শ্রমিক মহিনুর রহমানের ছেলে।
জানা যায়, স্কুলের শিক্ষকরা তাকে স্কুল ড্রেস বানানোর জন্য সাতদিনের সময় বেঁধে দেন। অভাবের সংসার তারপরও অনেক কষ্ট করে ছেলেকে একটি স্কুল ড্রেসের শার্ট বানিয়ে দেন। গত মঙ্গলবার (০৫ ফেব্রুয়ারি) শুধুমাত্র স্কুল ড্রেসের প্যান্ট ছাড়া শার্ট পরে স্কুলে যাওয়ার কারণে স্কুলের প্রধান শিক্ষক শহিদুল ইসলাম তাকে ক্লাস রুম থেকে ডেকে নেন মেহেদী হাসানকে। এরপর স্কুলের ল্যাব রুমের মধ্যে তাকে পশুর মত পিটিয়ে গুরুতর জখম করা হয়। পরে গুরুতর আহত ছাত্রকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেন স্বজনেরা। এর আগেও অনেক ছাত্রকে এভাবে মারধরের অভিযোগ রয়েছে প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে।
হাসপাতালে চিকিৎসাধীন মেহেদী হাসান জানান, স্কুল ড্রেসের প্যান্ট ছাড়া শার্ট পরে স্কুলে যাওয়ার কারণে স্কুলের প্রধান শিক্ষক শহিদুল ইসলাম স্যার আমাকে ক্লাস রুম থেকে ডেকে নিয়ে স্কুলের ল্যাব রুমের মধ্যে পশুর মত পিটিয়ে গুরুতর জখম করেন। আমার বাবা গরীব, ইটভাটায় কাজ করেন, অনেক কস্ট করে বাবা আমাকে একটি শার্ট কিনে দিয়েছেন কিন্ত প্যান্ট কিনতে পারেননি। তবে সামনের মাসে কিনে দেবেন বলে আমাকে কথা দিয়েছেন।
প্রধান শিক্ষক শহিদুল ইসলাম শিক্ষার্থী মেহেদী হাসানকে মারধরের কথা স্বীকার করে জানান, ‘যা করেছি তার মঙ্গল ও ভালোর জন্য করেছি’। এ ছাড়া আর কোন কথা বলতে চাননি তিনি।
মেহেদীর পিতা মহিনুর রহমান জানান, আমি গরীব মানুষ, ইটভাটায় কাজ করে কোন রকম সংসর চলে, অনেক কস্ট করে একটি শার্ট কিনে দিয়েছি ছেলেকে। কিন্ত প্যান্ট কিনে দিতে পারিনি। তাই বলে এতো অত্যাচার করা বলে ছেলের ওপর, আমরা গরীব বলে কি ন্যায় বিচার পাবো না ?
শার্শা উপজেলা নির্বাহী অফিসার পুলক কুমার মন্ডল বলেন, এ ব্যাপারে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা হাসান হাফিজুর রহমান চৌধুরীকে প্রধান করে তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করে দিয়েছি। রিপোর্ট পাওয়ার পর প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে’।