দেশের উত্তরাঞ্চলের জেলা ঠাকুরগাঁওয়ের রাণীশংকৈলে গত চার দিন থেকে তীব্র দাবদাহ আর ভ্যাপসা গরমে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে জনজীবন।
সূর্যের প্রচণ্ড উত্তাপে সবচেয়ে বেশি দুর্ভোগে পড়েছেন খেটে খাওয়া মানুষ। হাসপাতালগুলোতে বেড়েই চলছে রোগীর চাপ। রিকশাচালক, ভ্যানচালক থেকে শুরু করে বিভিন্ন পেশার শ্রমজীবী ও দিনমজুররা সবচেয়ে বেশি বিপাকে পড়েছেন।
বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা যায়, রোদের তেজে প্রয়োজন ছাড়া ঘর থেকে বের হচ্ছেন না কেউ। একটু স্বস্তি পেতে গাছের ছায়াতলে আশ্রয় নেন অনেকেই। খোলা আকাশের নিচে অসহ্য রোদের তাপে ঠিকমতো কাজ করতে পারছেন না আগাম আলু চাষাবাদে নিয়োজিত কৃষি শ্রমিকেরা।
নেকমরদ বাজারের রাস্তার পাশের পানীয় ও শরবতের দোকান থেকে আখের রস, লেবুর শরবত ইত্যাদি খেয়ে তৃষ্ণা মিটাতে দেখা যায় অনেককে।
শিবদিঘী পৌরবাজার এলাকায় ভ্যানচালক ইকবাল হোসেন জানান, আশ্বিন মাসে এমন কড়া রোদে ভ্যান চালানো কষ্ট হচ্ছে। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে রাস্তাঘাটে মানুষজন কম চলাচল করছে। অনেকে প্রয়োজন ছাড়া বাসা-বাড়ি থেকে বের হচ্ছেন না। গত তিন দিন থেকে সন্ধ্যার দিকে ভ্যান নিয়ে বের হন তিনি।
পৌরসভার কলেজ পাড়ার গৃহবধূ উম্মে হাবিবা জানান, গরমের মাঝে ঘন ঘন লোডশেডিংয়ে অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছি। বিশেষ করে ছেলেমেয়েদের এ সময় ফ্যানের বাতাস না পেয়ে ত্রাহি অবস্থার সৃষ্টি হয়। তিনি জানান, প্রতিটি বাসায় বাসায় এখন জ্বরের প্রকোপ দেখা দিয়েছে। গরমে সেসব রোগীদের নিয়ে নাজুক পরিস্থিতিতে দিনাতিপাত করতে হচ্ছে।
ঠাকুরগাও আবহাওয়া অফিস সূত্র জানায় গত চার দিন থেকে এ অঞ্চলের তাপমাত্রা ৩৪-৩৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসে ওঠানামা করছে। আগামী ২-৩ দিন এ অবস্থা বিরাজ করবে । এরপরে ঝড়-বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে।
রাণীশংকৈল স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. ফিরোজ হোসেন জানান, আবহাওয়া পরিবর্তনের এ সময়ের গরমে রোগবালাই থেকে বাঁচতে রাস্তার পাশে খোলা খাবার এবং অতিরিক্ত ঠান্ডা পানি খাওয়া থেকে বিরত থাকতে হবে। শেষ রাতের ঠান্ডায় ফ্যান কিংবা এসি না চালানোয় ভালো। প্রচুর পানি ও খাবার স্যালাইন খাওয়ার পরামর্শ দেন তিনি।
আনোয়ার হোসেন আকাশ,রাণীশংকৈল থেকেঃ