ঠাকুরগাঁওয়ের রাণীশংকৈলে আমন ক্ষেতের দিকে দূর থেকে তাকালে মনে হবে এ যেন কাশফুলের বাগান। তবে কাছে গেলেই এই ভুল ভাঙবে। আমন ধানকে ইঁদুরের হাত থেকে রক্ষা করতে জমিতে সাদা ঝাণ্ডা উড়ানোর এ অভিনব পদ্ধতি ব্যবহার করছেন উপজেলার কৃষকরা।
কৃষি বিভাগের পরামর্শে লাঠির মাথায় পলিথিন বেঁধে বানানো এই ঝাণ্ডা উড়িয়ে উপকৃত উপজেলার কৃষকেরা। কৃষকেরা জানান, কীটনাশকের চেয়েও বেশি কার্যকরি এই ঝাণ্ডা উড়ানো।
বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা যায়, সন্ধ্যা নামার সঙ্গে সঙ্গেই ইঁদুর আমন ধানের গাছ কেটে সাবাড় করছে। ফলে কৃষকেরা এর উপদ্রব থেকে ফসল বাঁচাতে পলিথিনের ঝাণ্ডা উড়িয়েছেন।
উপজেলার হোসেনগাঁও ইউপির হাটগাঁও গ্রামে নিজের জমিতে পলিথিনের ঝাণ্ডা উড়িয়েছেন কৃষক হালিম। তিনি বলেন, ‘এক বিঘা ধান লাগিয়েছি ধান ভালোই হবে আশা রাখি। কিন্তু হঠাৎ ধান খেতে ইঁদুরের আক্রমণে অনেক ধানের গাছ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। গাছের গোড়া কেটে দিয়েছে। ক্ষেতে অনেক বড় বড় গর্ত তৈরি করছে। দিনের বেলা মানুষের উপস্থিতির কারণে তারা কম আক্রমণ করে। তবে রাত হলে উপদ্রব বেড়ে যায়। তাই এই পলিথিনের ব্যবহার করা হয়েছে। কোনো শব্দ পেলে ইঁদুর স্থান পরিবর্তন করে। রাতে পলিথিন বাতাসে নড়ে উঠে আর এই বাজনায় ইঁদুর পালিয়ে যায়।’
উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, এবার উপজেলায় ২১ হাজার ৪৫৫ হেক্টর জমিতে আমন আবাদ হয়েছে।
তথ্য মতে, ইঁদুরের বংশ বৃদ্ধির হার অত্যন্ত বেশি। সুষ্ঠু পরিবেশে একজোড়া ইঁদুর থেকে বছরে প্রায় তিন হাজার ইঁদুর জন্মলাভ করতে পারে। জন্মদানের দুইদিনের মধ্যেই এরা পুনরায় গর্ভধারণে সক্ষম হয়। জন্মদানের তিন মাসের মধ্যে বাচ্চা দিতে সক্ষম হয়। ইঁদুরের জীবনকাল ২-৩ বছর।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সঞ্জয় দেবনাথ জানান, উপজেলার কিছু কিছু এলাকায় ইঁদুরের উপদ্রব দেখা দিয়েছে। কৃষকদের কীটনাশক ব্যবহারের পাশাপাশি পলিথিন ঝাণ্ডা উড়ানোর জন্য বলা হয়েছে। এই ঝাণ্ডা উড়ানোর ফলে কৃষকরা উপকৃত হচ্ছেন বলেও জানান তিনি।
আনোয়ার হোসেন আকাশ রাণীশংকৈল থেকেঃ