সেজুল হোসেন : ভাটির প্রবাদ পুরুষ, বাউল শাহ আব্দুল করিমের চতুর্থ মৃত্যুবার্ষিকী ছিল গতকাল। এবং গতকাল আবারো ফরিদা পারভীন দৃঢ়তার সঙ্গে বললেন ’শাহ আব্দুল করিম বাউল ছিলেন না’ । তার ভাষায় ‘শুধু শব্দ দিয়ে বাউল হওয়া যায় না।’ নির্দিষ্ট করে আরো কিছু বৈশিষ্টের কথা উল্লেখ করে তিনি বললেন এইসব না থাকলে তাকে বাউল বলা যায় না।
সব শেষে তিনি একটি স্ববিরোধী কথা বলে চিঠিটি শেষ করেছেন। বলেছেন `সবার কাছে আমার অনুরোধ থাকবে কোনো বিষয়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণের আগে তার সত্যতা যাচাই করে দায়িত্বশীলতার পরিচয় দিবেন।’
বিগত ৭০ বছরেরও বেশি সময়কাল ধরে বৃহত্তর সিলেট তথা সারা বাংলায় বিশ্বের কোটি কোটি সঙ্গীতপ্রিয় বাঙ্গালীর প্রাণের মানুষ শাহ আব্দুল করিমকে বাউল না বলে ফরিদা যে স্পর্ধা দেখিয়েছেন তার জন্য সারা করিম ভক্তরা চরম মর্মাহত হয়েছেন। ফেসবুক সহ সামাজিক সাইটগুলিতে গত কদিনে এই প্রতিবাদ লক্ষ্য করা গেছে।
গতকাল বাংলানিউজে প্রকাশিত ফরিদা পারভীনের চিঠির শেষ কথার উত্তরে আমি বলবো ‘বাউল’ শব্দটার বিপরীতে তিনি যেসকল বৈশিষ্ট তালিকার উল্লেখ করেছেন সেটাই কি চুড়ান্ত ? ফরিদা পারভীন আপনাকে বলি, শাহ আব্দুল করিম ’বাউল’ উপাধির জন্য কাঙাল ছিলেন না। তিনি বাউল ছিলেন না এটা প্রমানের জন্য আপনি ৯ তারিখের স্বাক্ষাৎকারে যে বাক্য ভঙ্গির প্রয়োগ করলেন সেটা ছিল ধৃষ্টতা। সেখানে কোমলতা ছিল না। বক্তব্য প্রকাশের পর আপনার উপর সকল শ্রেণীর মানুষের ক্ষেপে ওঠার পেছনের কারন : শাহ করিমকে ‘বাউল’ বলতেই হবে এটা না। বরং এই ক্ষেপে ওঠা ছিল ধৃষ্টতা ও অসম্মানের প্রতিবাদ। ফরিদা পারভীনের বক্তব্যকে সঠিক ও যথার্থ উল্লেখ করে অনেকেই নিজেদের অভিমত দিয়ে শাহ আব্দুল করিমকে অসম্মান করাটাকে পাকাপোক্ত করার চেষ্টা করেছেন এটা দুঃখজনক। সব শেষে বলবো শাহ আব্দুল করিমের মৃত্যু দিবসে ‘শাহ আব্দুল করিম বাউল না’ কথাটা আবারো বাংলানিউজ প্রকাশ করে ফরিদা পারভীনের কথাই যথার্থ প্রতিষ্টার চেষ্টা মনে হয়েছে।
সেজুল হোসেন : কবি, গীতিকার ।