সুদর্শন আচার্য্য, মদন (নেত্রকোণা) ঃ নেত্রকোণা জেলার মদন উপজেলার সুদূর পাক আমলে নির্মিত ২৫ শয্যা থেকে ৫০ শয্যায় উন্নীত হলেও উন্নতি হয়নি স্বাস্থ্য সেবার মান। গত মঙ্গলবার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা নিতে আসা সাধারণ লোকজন ক্ষোভ প্রকাশ করে এ প্রতিনিধিকে জানান, খালিয়াজুরী হতে আসা ১১ মাসের আর্জ ভৌমিক, কাইকুড়িয়া গ্রামের সেলিনা আক্তার (২৫) গত দুই-তিন দিন ধরে ডায়রিয়া আক্তান্ত হয়ে মদন স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি হন। এ উপজেলাটি প্রত্যন্ত হাওড় এলাকা হওয়ায় নি¤œ আয়ের লোকজনের সংখ্যা বেশি। এখানে দরিদ্র কৃষক, খেটে খাওয়া সাধারণ মানুষ চিকিৎসা সেবা নিতে আসে। কিন্তু ডাক্তার শূন্য ও ঔষধের অভাবের কারণের চিকিৎসা নিতে আসা সাধারণ লোকজন সঠিকভাবে চিকিৎসা সেবা পাচ্ছে না। হাসপাতালে ডায়রিয়া আক্রান্ত রোগীরা স্যালাইন ও ঔষধ না পেয়ে বাধ্য হয়ে বাহির হতে ঔষধ কিনে আনে। ফলে গুণতে হয় মোটা অংকের টাকা। উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে একমাত্র খাওয়ার স্যালাইন ছাড়া অন্যকোন ঔষধ পাওয়া যায় না। হাসপাতালে ভর্তিকৃত রোগী আবুল হাসেম(৭০) ও ওয়ালী উল্লাহ(২৭) জানান, আমরা দুই-তিন দিন ধরে ভর্তি আছি। কিন্তু কোন ঔষধ হাসপাতাল হতে পাওয়া যায়নি। ঔষধ সংকট বিষয়ে জানতে চাইলে সিনিয়র নার্স হাসিনা বেগম প্রথমে কথা বলতে অপারগতা প্রকাশ করলে চাপাচাপির মুখে বলেন, ষ্টোর রুমে ঔষধ আছে কিনা, জানতে হবে। তবে আইভি-১০০০ স্যালাইন আমি পেয়েছি। একটি করে আমরা সাধারণত রোগীদের হাসপাতাল হতে দিচ্ছি এবং বাকী ঔষধ বাহির থেকে কিনে আনার জন্য বলছি।
স্কুল অব এক্সিলেন্সের প্রিন্সিপাল নুরে আলম সিদ্দিকী এক শিশু বাচ্চা পানিতে পড়া রোগী দেখতে গিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, হাসপাতালটি ভাটী এলাকায় হওয়ায় সাধারণ মানুষ চিকিৎসা সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। তা থেকে জরুরীভাবে উত্তোরণ হওয়ার জন্য উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি কামনা করছি। অন্যদিকে ভাটীবঙ্গ, লোক সাহিত্য, গবেষণা সংগ্রহ কেন্দ্রের সভাপতি জনাব আব্দুল হান্নান এ প্রতিনিধিকে জানান, সেই পাক আমলে নির্মিত হাসপাতালটির রুপচিত্রে এখনও আধুনিকতার ছোঁয়া লাগেনি। এলাকার অনেক লোকজন বড় বড় জায়গায় অবস্থান করলেও বিষয়টি তাদের দৃষ্টিগোচর হচ্ছে না। সরকারি হাসপাতালে বর্তমান সরকারের ঘোষণা অনুযায়ী চিকিৎসার মান শতভাগ নিশ্চিত করার কথা থাকলেও বাস্তবে তার উল্টো চিত্র। মঙ্গলবার ডাঃ মুঠোফোনে ঔষধ সংকট বিষয়ে জানতে চাইলে জেলা সিভিল সার্জন ডাঃ তাজুল ইসলাম জানান, বন্যার পরবর্তীতে ডায়রিয়ার প্রাদুর্ভাব কিছুটা দেখা দিয়েছে। কিন্তু সেটা আমরা কাটিয়ে উঠার চেষ্টা করছি। তবে স্যালাইন সংকট থাকার কথা নয়।
Tagged with: মদনে ডাক্তার শূন্য ৫০ শয্যা হাসপাতালে ঔষধ পাচ্ছেনা ভর্তিকৃত রোগীরা