ব্রেকিং নিউজ
Home | ফটো সংবাদ | ভোটারদের দ্বারে দ্বারে রংপুর সিটি নির্বাচনে আগ্রহীদেরকে নিয়ে বসে সমঝোতার চেষ্টা আওয়ামী লীগের

ভোটারদের দ্বারে দ্বারে রংপুর সিটি নির্বাচনে আগ্রহীদেরকে নিয়ে বসে সমঝোতার চেষ্টা আওয়ামী লীগের

স্টাফ রিপোর্টার : রংপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন প্রত্যাশীরা চষে বেড়াচ্ছেন ভোটারদের দ্বারে দ্বারে। প্রার্থীরা নৌকা প্রতীক পেতে তদবির করছেন দলীয় শীর্ষ নেতাদের কাছেও। সব মিলিয়ে ১০ জন মনোনয়নপ্রত্যাশী তাদের আগ্রহের কথা জানিয়েছেন কেন্দ্রে।

বর্তমান মেয়র সরফুদ্দীন আহমেদ ঝন্টু ছাড়াও আওয়ামী লীগের উপদেষ্টামণ্ডলীর সদস্য চৌধুরী খালেকুজ্জামান, মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি শাফিয়ার রহমান, সাধারণ সম্পাদক তুষার কান্তি মণ্ডল, রংপুর আওয়ামী লীগের কোষাধ্যক্ষ ও রংপুর চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজের সাবেক সভাপতি আবুল কাশেম, রংপুর মেট্রোপলিটন চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজের সভাপতি রেজাউল ইসলাম মিলন, রংপুর মুক্তিযোদ্ধা সংসদের কমান্ডার মোছাদ্দেক হোসেন বাবলু, আওয়ামী লীগ নেতা ইলিয়াছ আহাম্মেদ, রংপুর-৫ আসনের সংসদ সদস্য এইচ এম আশিকুর রহমানের ছেলে রাশেক রহমান নৌকা প্রতীক পেতে চেষ্টা করছেন।

এত আগ্রহীর মধ্যে একজনকে প্রার্থী হিসেবে বেছে নেয়া একটু ঝামেলার-বলছেন দলের কেন্দ্রীয় নেতারা। এ জন্য আগ্রহীদেরকে নিয়ে বসে সমঝোতার চেষ্টা করতে চায় আওয়ামী লীগের কেন্দ্র। সেখানে সমঝোতা না হলে একজনকে বেছে নেয়া হবে।

জানতে চাইলে আওয়ামী লীগের রংপুর বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত সাংগঠনিক সম্পাদক বি এম মোজাম্মেল হক বলেন, ‘আগামী ১২ নভেম্বর আমরা রংপুরে নেতাদের সাথে ঢাকায় বসব। সেখানে স্থানীয় নেতা ছাড়াও মনোনয়ন প্রত্যাশী এবং বিশিষ্ট ব্যক্তিরা থাকবেন। সেখানে সবার মতামত শোনা হবে। সবশেষ আমাদের স্থানীয় সরকার মনোনয়ন বোর্ড সিদ্ধান্ত নেবে।’

আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতাদের বিশ্বাস, যারা রাজনীতি করেন তাদের সবারই ইচ্ছা থাকে নির্বাচনে অংশ নেয়ার। যারা এখানে মনোনয়ন চাচ্ছেন তাদের সবাই যোগ্যতাসম্পন্ন। সব নেতাকর্মীদের সাথে হয়তো সবাইকে একভাবে পছন্দ নাও করতে পারে কিন্তু নেত্রী যাকে মনোনয়ন দেবেন দিন শেষে তাঁর পক্ষেই কাজ করবেন সবাই।

রংপুর মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক তুষার কান্তি মণ্ডল বলেন, ‘আমাদের এখানে কে মনোনয়ন পাবেন এ সিদ্ধান্ত নেয়ার সর্বময় ক্ষমতার অধিকারী হলেন দলীয় সভাপতি শেখ হাসিনা। উনি যে সিদ্ধান্ত দেবেন তা আমাদের দলের সবাই মেনে নিবে।’

স্থানীয় সরকার নির্বাচনে মনোনয়ন দেয়ার ক্ষেত্রে আওয়ামী লীগ স্থানীয় পর্যায় থেকে সুপারিশ নেয়। সচরাচর সেখান থেকেই বেছে নেয়া হয় প্রার্থী। তবে এর ব্যতিক্রমও আছে। নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন নির্বাচনে স্থানীয় আওয়ামী লীগ সুপারিশ না করলেও মেয়র পদে আওয়ামী লীগ মনোনয়ন দেয় সেলিনা হায়াৎ আইভীকে। তাকে যে দল মনোনয়ন দিতে যাচ্ছে, সেটাও আগে থেকেই প্রচার ছিল।

রংপুরে ২১ ডিসেম্বরের ভোটে অংশ নিতে আগ্রহী প্রার্থীদেরকে তাদের মনোনয়নপত্র জমা দিতে হবে ২২ নভেম্বরের মধ্যে। অর্থাৎ এই নির্বাচনে প্রার্থিতা চূড়ান্ত করতে দলগুলোর হাতে দুই সপ্তাহের মত সময় আছে।

২০১২ সালে রংপুর পৌরসভা সিটি করপোরেশনে উন্নীত হওয়ার পর প্রথম নির্বাচনে ঝন্টু জিতেছিলেন ২৭ হাজার ভোটের ব্যবধানে। গত নির্বাচনে পরাজিত মোস্তাফিজার রহমান মোস্তফাকে এরই মধ্যে দলীয় প্রার্থী হিসাবে ঘোষণা দিয়েছে জাতীয় পার্টি। সারা দেশে আওয়ামী লীগের প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী বিএনপি হলেও রংপুরে ক্ষমতার বাইরে থাকা দলটির তেমন অবস্থান নেই। সেখানে সরকারি দলের সঙ্গে লড়াই হয় হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের জাতীয় পার্টির।

গত পাঁচ বছরে আওয়ামী লীগের মেয়র ঝন্টুর আমলে রংপুরে ব্যাপক উন্নয়ন হয়েছে বলে দাবি করছে আওয়ামী লীগ। এ কারণে প্রার্থী যেই হোক না কেন, ভোটাররা নৌকাকেই জয়ী করবে বলে আশা করছে দলটি।

সিটি করপোরেশনের হিসাবে রংপুর মহানগরে ঝন্টুর আমলে ২৯১ কোটি টাকার উন্নয়ন কাজ হয়েছে। বাস্তবায়নাধীন আছে আরও ৩৯১ কোটি টাকার কাজ।

সড়ক, কালভার্ট, ড্রেন, শৌচাগার, উচ্চ জলধারা নির্মাণ, সিটি ভবন সম্প্রসারণ, বিনোদন পার্ক নির্মাণ ও হাসপাতাল স্থাপন, ডাস্টবিন স্থাপন, সাত একর জমি ক্রয়, বিভিন্ন এলাকায় বিনামূল্যে ওয়াইফাই চালু, সিসি ক্যামেরা স্থাপন, সড়ক বাতি স্থাপনসহ নানা প্রকল্পের কারণে রংপুরের জীবযাত্রা এখন আগের চেয়ে সহজ ও আরামদায়ক হয়েছে বলে দাবি সরকারি দলের।

এসব প্রকল্প বাস্তবায়নে কোনো বিতর্ক উঠেনি দাবি করে ঝন্টুর সমর্থকরা দাবি করছেন, বর্তমান মেয়রকেই আবারও প্রার্থী করার ইঙ্গিত দেয়া হয়েছে দলের কেন্দ্র থেকে। ঝণ্টু সমর্থক একজন নেতা বলেছেন, ‘ঝন্টুর চলমান উন্নয়ন কর্মকাণ্ডে প্রধানমন্ত্রীর আস্থা রয়েছে বলেই তাকে প্রতিমন্ত্রীর মর্যাদা দেয়া হয়েছে।’

ঝন্টুও সাংবাদিকদের বলেছেন, ‘আমি আশাবাদী দল আমাকে মনোনয়ন দেবে।’

তবে ঝন্টু বিরোধীরা বলছেন, ঝন্টুর সাথে স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের সম্পর্ক নেই। তিনি সুবিধাবাদী হিসাবেই পরিচিত। তাকে আগামীতে মনোনয়ন দিলে আওয়ামী লীগকে হারতে হবে। তাই এবার তার বদলে অন্য কাউকে মনোনয়ন দেয়ার দাবি জানিয়েছেন এই অংশের নেতার।

নৌকা প্রতীক পেতে আগ্রহী আওয়ামী মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি শাফিয়ার রহমান শাফি ঢাকাটাইমসকে বলেন, ‘ভোট করার জন্য আমি নিজেই আগ্রহী। অনেক দিন ধরেই আমি কাজ করছি। আমি ভালো রেজাল্ট করবো বলে আশাবাদী।’

শাফি বলেন, ‘রংপুর আগে ছিলো এরশাদ সাহেবের এলাকা এখন আওয়ামী লীগের ঘাঁটি এখানে আমরা যদি কোন ভালো, ত্যাগী ও দলের জন্য নিবেদিত কাউকে সিলেক্ট করে জনগণ তাঁর পক্ষে রায় দেবে।’

আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদ সদস্য চৌধুরী খালেকুজ্জামান  বলেন, ‘রংপুর সিটি করপোরেশনে বিজয়ে সকল বাস্তবতা আমাদের রয়েছে। তাই এখানে খুব সতর্কভাবে প্রার্থী মনোনয়ন করতে হবে। এক্ষেতে আমি আশাবাদী। বিগত দুইটি জাতীয় সংসদ নির্বাচন ও বিগত সিটি নির্বাচনে দল থেকে মনোনয়ন চেয়েছিলাম কিন্তু দলীয় হাইকমান্ডের নির্দেশে আমি নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়িয়েছি। তাই আশা করি এ নির্বাচনে দল আমাকে মনোনয়ন দেবে।’

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

*

x

Check Also

মদনে সিএনজি অটো রিক্সা শ্রমিক ইউনিয়নের কমিটি গঠন

সুদর্শন আচার্য্য, মদন (নেত্রকোণা) ঃ নেত্রকোণা মদন উপজেলায় মিশুক, সিএনজি, অটো রিক্সা ...

মদনে হানাদারমুক্ত দিবস পালিত

সুদর্শন আচার্য্য, মদন (নেত্রকোণা)ঃ নেত্রকোণা মদনে উপজেলা প্রশাসন ও মুক্তিযুদ্ধ সংসদ কমান্ডের ...