স্টাফ রিপোর্টার, ৭ মার্চ, বিডিটুডে ২৪ডটকম : প্রধান বিরোধী দল বিএনপি বৃহস্পতিবার সারাদেশে ফের সকাল-সন্ধ্যা হরতালের ডাক দিয়েছে। একইসঙ্গে এদিন হরতালের ডাক দিয়েছে জামায়াতে ইসলামী।
বিএনপি-জামায়াত পৃথকভাবে একই দিনে হরতালের ডাক দিলেও ১৮ দলীয় জোট সম্মিলিতভাবে এ হরতাল পালন করবে।
বিএনপি-জামায়াত ছাড়াও হরতালে মাঠে থাকবে জোটের অন্য দলগুলো।
বুধবার রাতে বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার সঙ্গে ১৮ দলীয় জোটের নেতাদের বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।
বৈঠকে ১৮ দলীয় জোটের অন্যতম শরীক জামায়াতে ইসলামী বাংলাদেশসহ বাংলাদেশ জাতীয় পার্টি, লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টি (এলডিপি), ইসলামী ঐক্যজোট, বাংলাদেশ ন্যাপ ও লেবার পার্টিসহ ১৮ দলীয় জোটের শীর্ষ নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
বুধবার বিকেলে নয়া পল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে হরতালের ঘোষণা দেন দলের ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। অন্যদিকে বুধবার সন্ধ্যায় এক বিবৃতিতে বৃহস্পাতিবার দেশব্যাপী সকাল-সন্ধ্যা হরতাল ঘোষণা করেন জামায়াতে ইসলামীর ভারপ্রাপ্ত সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা রফিকুল ইসলাম খান।
মির্জা ফখরুল দাবি করেন, পূর্বঘোষিত বিক্ষোভ সমাবেশে পুলিশ পরিকল্পিতভাবে হামলা চালিয়েছে। সমাবেশে গুলি চালিয়ে নেতাকর্মীদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়া হয়। এতে বহু নেতাকর্মী আহত হয়। এক পর্যায়ে পুলিশ বিএনপি কার্যালয় লক্ষ্য করে গুলি ছুড়তে থাকে। এতে পুরো এলাকা রণক্ষেত্রে পরিণত হয়।
তিনি বলেন, ‘সরকারের নির্দেশে পুলিশ এ বর্বর হামলা চালিয়েছে। গত কয়েকদিনে পুলিশ, আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগের হামলায় প্রায় ১৪০ জন নিহত হয়েছেন। এ অবস্থায় আর ঘরে বসে থাকা যাবে না। সময় এসেছে এ বর্বরতার বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানোর।’
সরকারের এ অমানবিক আচরণের বিরুদ্ধে বিএনপি হরতাল দিতে বাধ্য হয়েছে বলেও তিনি জানান।
ফখরুল বলেন, ‘গত কয়েকদিনে সারাদেশে সরকারের আইন শৃঙ্খলা বাহিনী এবং সশস্ত্র যুবলীগ, ছাত্রলীগের হামলা ও গ্রেপ্তারের প্রতিবাদে বিএনপির ডাকে বুধবার বিক্ষোভ সমাবেশ কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়েছিল। দলের নয়াপল্টনস্থ কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে বিক্ষোভ সমাবেশ শান্তিপূর্ণভাবে অনুষ্ঠিত হচ্ছিল। আমাদের অনেক গুরুত্বপূর্ণ নেতা বক্তব্য রাখার পর সভার শেষ পর্যায়ে আকস্মিকভাবে বিনা উসকানিতে পুলিশ-র্যাব বিএনপির শান্তিপূর্ণ সমাবেশের ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ে।’
আওয়ামী যুবলীগ-ছাত্রলীগও এ হামলায় অংশ নিয়েছে বলে অভিযোগ করে তিনি বলেন, ‘তারা বিভিন্ন গলি থেকে বিএনপি নেতা-কর্মীদের লক্ষ্য করে গুলি ও বোমা নিক্ষেপ করে।’
ফখরুল জানান, পুলিশের গুলিতে প্রায় দেড় শতাধিক নেতা-কর্মী গুরুতর আহত হয়েছেন। পুলিশ-র্যাব শান্তিপূর্ণ সমাবেশে নিরস্ত্র মানুষের ওপর সশস্ত্র অবস্থায় ঝাঁপিয়ে পড়ে সরকারের গণতন্ত্রের একটি নমুনা প্রদর্শন করলেন।
তিনি আরো বলেন, ‘সরকার দেশকে ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে ঠেলে দিয়েছে। এরা ফ্যাসিবাদের বিষাক্ত থাবায় সবকিছু নিয়ন্ত্রণ করতে চাচ্ছে। এখন কঠিন এবং চূড়ান্ত প্রতিরোধে এদের পতন ঘটানো ছাড়া মানুষের আর কোনো গত্যন্তর নেই। আর ফিরে দেখার কিছু নেই।’
দেশবাসীর প্রতি আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, ‘দেশের সর্বত্র ব্যারিকেড গড়ে তুলতে হবে। এই রক্ত পিপাসু সরকারের আজকের নারকীয় তাণ্ডবের প্রতিবাদে বৃহস্পতিবার সারাদেশে বিএনপির ডাকে সকাল-সন্ধ্যা হরতাল পালিত হবে।’
এর আগে দেশব্যাপী পুলিশের গুলিতে জামায়াত-শিবিরের নেতাকর্মীসহ শতাধিক মানুষ নিহত হওয়ার প্রতিবাদে গত ৩ ও ৪ মার্চ পৃথকভাবে হরতাল পালন করে জামায়াত। একই ইস্যুতে ৫ মার্চ পৃথকভাবে হরতাল পালন করে বিএনপি।