ইন্টারন্যাশনাল ডেস্ক : বৃদ্ধা মা-কে তালাবন্দি রেখে স্বামীকে নিয়ে বেড়াতে চলে গেলেন তারই গর্ভে ধারন করা সন্তান। এমনকি বাসায় রেখে যাননি পর্যাপ্ত খাবারও।
এর আগে পশ্চিমবঙ্গের আনন্দপুরে ৯৬ বছরের বৃদ্ধা সবিতা নাগকে বাড়িতে তালাবন্দি রেখে আন্দামানে বেড়াতে গিয়েছিলেন ছেলে এবং বউমা।
এবার অনেকটা একই ধরনের ঘটনা ঘটলো ডিএসপি টাউনশিপের বি-জো়নে বিদ্যাপতি রোডে। ৭৪ বছরের বৃদ্ধা দেবযানী কুমারকে ছয়দিন ধরে তালাবন্ধ রেখে আত্মীয়ের বাড়িতে বেড়াতে যান তার মেয়ে–জামাই। ঘটনার জেরে বৃদ্ধার মেয়েকে চড়-থাপ্পড় মারার অভিযোগ উঠেছে প্রতিবেশী নারীদের একাংশের বিরুদ্ধে।
স্থানীয় সূত্রের খবর, মেয়ে প্রিয়াঙ্কা বার্নোয়াল এবং জামাই বিজয় বার্নোয়ালের সঙ্গে থাকেন দেবযানী। কর্মরত অবস্থায় বাবার মৃত্যুর পরে বছর পাঁচেক আগে ডিএসপি-তে চাকরি পান প্রিয়াঙ্কা। মঙ্গলবার সকালে জানলা দিয়ে পড়শিদের ডাকতে দেখা যায় দেবযানীকে।
তিনি বলে, ‘ঘরে কিচ্ছু নেই। একটু খাবার দাও না।’ বৃদ্ধার আকুতি শুনে জড়ো হন প্রতিবেশীরা। খবর দেওয়া হয় বি-জোন ফাঁড়িতে এবং ৫ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর স্বরূপ মুখোপাধ্যায়কে। কিন্তু তালা ভাঙা সম্ভব না হওয়ায় জানলার গ্রিল কাটার পরিকল্পনা করে পুলিশ।
পুলিশকে বৃদ্ধা জানিয়েছেন, ছট পুজো উপলক্ষে গত বুধবার স্বামীর সঙ্গে আসানসোলে ননদের বাড়ি যান প্রিয়াঙ্কা। আমার জন্য ঘরে সামান্য কিছু খাবার রেখে তারা বাইরে থেকে আবাসনের তালাবন্ধ করে যান।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক পড়শিদের বক্তব্য, ‘মাসিমা বারবার বলছিলেন, খাবার শেষ হয়ে গিয়েছে। ঘরে কিচ্ছুটি নেই। বুড়ো মানুষটার উপরে এমন অত্যাচার কেন ‘
কাউন্সিলর স্বরূপ বলেন, ‘এমন ঘটনা কিছুতেই মেনে নেওয়া যায় না।’ খবর পেয়ে স্বামীর মোটরবাইকে চেপে আবাসনে আসেন প্রিয়াঙ্কা। খোলা হয় ঘরের তালা। প্রিয়াঙ্কাকে পড়শিদের কাছে দাবি করতে শোনা যায়, মাঝে একদিন তার স্বামী এসে দেবযানীদেবীকে দেখে গিয়েছেন। স্থানীয় এক যুবককে বৃদ্ধার ‘খোঁজখবর’ করার জন্যও বলে রেখেছিলেন তারা। অভিযোগ, সে কথায় কান না দিয়ে প্রিয়াঙ্কার উপরে চড়াও হন পড়শি নারীদের একাংশ।
তাদের বলতে শোনা যায়, ‘মা-কে খাবার না দিয়ে তুমি ননদ-প্রীতি দেখাচ্ছিলে! মা-র কিছু হলে কী হতো?’ হেনস্থার শিকার হন বিজয়ও। বার্নোয়াল দম্পতিকে আটক করে থানায় নিয়ে যায় পুলিশ। পুলিশের সামনে দেবযানীদেবী বলেন, ‘মেয়ে-জামাই ক্ষুণ্ণ হবে। কিন্তু আমার আর উপায় ছিল না।
পুলিশ জানায়, দেবযানীদেবীকে চিকিৎসার জন্য ডিএসপি হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। এমন ঘটনা যাতে ফের না ঘটে, সে জন্য মেয়ে-জামাইয়ের কাছে মুচলেকাও চাওয়া হয়েছে।