স্টাফ রিপোর্টার : কোটা সংস্কার আন্দোলন নিয়ে ছাত্রলীগের ‘বাড়াবাড়ির’ অভিযোগ পেয়ে তাদেরকে সতর্ক করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের জানিয়েছেন, শনিবার সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের গণসংবর্ধনা শেষে ছাত্রলীগ নেতাদেরকে ডেকে কথা বলেছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি। বলেছেন, তিনি আর এসব অভিযোগ শুনতে চান না।
রবিবার সচিবালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলছিলেন কাদের। এ সময় তিনি এসব কথা বলেন। যদিও সম্প্রতি তিনি এক সংবাদ সম্মেলনে বলেছিলেন, ছাত্রলীগের কমিটি নেই, তাই এই হামলায় ছাত্রলীগ জড়িত, এ কথা তিনি বলতে পারেন না।
ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘আমরা কিছু অভিযোগ পেয়েছি কোটা সংস্কারের যে আন্দোলন; এ আন্দোলনে ছাত্রলীগের নামে আমরা কিছু বাড়াবাড়ির অভিযোগ পেয়েছিলাম।’
‘গতকালকে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে আমাদের সভা শেষে আমাদের নেত্রী, দেশরন্ত শেখ হাসিনা পরিষ্কারভাবে আমার সামনে নেতাদের বলেছেন, ছাত্রলীগের নামে যেন কোনো বাড়াবাড়ির অভিযোগ আর তিনি না পান।’
‘পরিষ্কারভাবে তাদের সতর্ক করে দেয়া হয়েছে, যাতে ছাত্রলীগের নামে বাড়াবাড়ির কোনো অভিযোগ আমাদের কাছে না আসে।’
গত ফেব্রুয়ারি থেকে কোটা সংস্কার আন্দোলন শুরু হওয়ার পর থেকে ছাত্রলীগ কোনো বাধা দেয়নি। বরং সংগঠনের নেতা-কর্মীদেরও এই আন্দোলনে অংশ নেয়ার তথ্য এসেছে। সচরাচর ছাত্র সংগঠনগুলো শিক্ষার্থীদেরকে হল থেকে মিছিল নিয়ে বের হতে বাধা দিলেও ছাত্রলীগ তাদেরকে কোনো বাধা দেয়নি।
গত ১১ এপ্রিল প্রধানমন্ত্রী সংসদে কোটা বাতিলের ঘোষণা দেয়ার পর ছাত্রলীগ আনন্দ মিছিলও করেছিল। তবে গত ২৭ জুলাই ‘রক্ত গরম হয়ে যাওয়ার পর’ কোটা আন্দোলনের নেতা রাশেদ খাঁন ফেসবুক লাইভে এসে ‘মনে হয় তার বাপের দেশ’ জাতীয় বক্তব্য দিয়ে পরিস্থিতি উত্তপ্ত করে দেন।
ছাত্রলীগ অভিযোগ করে, এই কটূক্তি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে উদ্দেশ্য করে করা হয়েছে এবং এরপর থেকে তারা কোটা আন্দোলনের নেতাদের ওপর হামলা করছেণ ৩০ জুন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে, ২ জুলাই কেন্দ্রীয় শহীব মিনার এবং রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়েও কোটা আন্দোলনের নেতাদের পেটানো হয। এর মধ্যে রাজশাহীতে এক জনকে হাতুড়ি দিয়ে পিটিয়ে হাড় ভেঙে দেয়া হয়েছে।
সব শেষ গত ১৫ জুলাই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে নিপীড়নবিরোধী শিক্ষার্থীদের ব্যানারে জড়ো হওয়া শিক্ষার্থীদেরকেও পেটানো হয়। একই দিন কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে শিক্ষকদের এক জমায়েতও ঘিরে রাখে ছাত্রলীগ নেতা-কর্মীরা আর এ সময় একজন শিক্ষকের সঙ্গে তাদের তর্ক বিতর্ক হয়।
এই ঘটনায়ও ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা ব্যাপকভাবে সমালোচিত হচ্ছে। আর বিশ্ববিদ্যালয়ের সেই শিক্ষকরা তাদেরকে আক্রমণ করে বক্তব্য দিচ্ছেন।