বিনোদন রিপোর্টার : দেশের জনপ্রিয় অভিনেতা আনোয়ার হোসেন আর আমাদের মাঝে নেই। বেশ কিছু দিন হলো তিনি রাজধানীর একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন।
বৃহস্পতিবার রাত আড়াইটায় রাজধানীর স্বয়ার হাসপাতালে মৃত্যুবরণ করেন তিনি। তিনি নিউমোনিয়া, পারকিনসনসহ বার্ধক্যজনিত নানা রোগে ভুগছিলেন বলে সাংবাদিকদের জানান চিকিৎসার দায়িত্বে থাকা ডা. মীর্জা নাজিমউদ্দিন।
মৃত্যুকালে আনোয়ার হোসেন চার ছেলে ও এক মেয়ে রেখে যান। চার ছেলের মধ্যে বড় ছেলে থাকেন সুইডেনে। অন্য তিন ছেলে থাকেন যুক্তরাষ্ট্রে।
আনোয়ার হোসেনের জন্ম জামালপুর জেলার সরুলিয়া গ্রামে । ১৯৩১ সালের ০৬ নভেম্বর তার জন্ম। ১৯৫১ সালে জামালপুর স্কুল থেকেই মেট্রিক পাস করেন। এরপর ভর্তি হন ময়মনসিংহ আনন্দ মোহন কলেজে। মূলত স্কুল জীবন থেকেই তিনি অভিনয়ের সাথে জড়িত তিনি। স্কুল জীবনে প্রথম অভিনয় করেন আসকার ইবনে সাইকের পদক্ষেপ নাটকে অভিনয়। ১৯৫৭ সালে তিনি ঢাকায় চলে আসেন । সে বছরই পরিচালক মহিউদ্দিন এর সহকারী মো: আনিস আনোয়ার হোসেন কে সাথে নিয়ে তার সাথে পরিচয় করিয়ে দিলেন। আর প্রথম পরিচয়েই আনোয়ার হোসেন তার অভিনয় দক্ষতা প্রমাণ করতে পারেন বলে তিনি ” তোমার আমার ” ছবিতে অভিনয়ের সুযোগ পান। আর এটাই ছিলো আনোয়ার হোসেনের অভিনীত প্রথম চলচ্চিত্র। লাঠিয়াল ছবিতে অভিনয়ের জন্য তিনি প্রথম জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পান। পরে অবশ্য আরো দুবার তিনি এ সম্মানে ভূষিত হয়েছেন। বাংলা চলচ্চিত্রে অসামান্য অবদানের জন্য ১৯৮৫ সালে সরকার তাকে একুশে পদকে ভূষিত করে। অভিনয়ের স্বীকৃতি হিসেবে বাচসাস, পাকিস্তানের নিগারসহ অসংখ্য পুরস্কারে ভূষিত হয়েছেন এ গুণী অভিনয়শিল্পী। প্রথম জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পান ‘লাঠিয়াল’ ছবিতে অভিনয়ের জন্য। পরে আরও দু’বার তিনি এ সম্মানে ভূষিত হন।
এ ছাড়া ২০১১ সালে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার প্রদান আসর থেকে আজীবন সম্মাননা পেয়েছেন গুণী এ শিল্পী।
বর্নাঢ্য জীবনে তিনি ‘নবাব সিরাজদ্দৌলা’, ‘লাঠিয়াল’, ‘জীবন থেকে নেয়া’, ‘ভাত দে’সহ তিনি পাঁচ শতাধিক ছবিতে অভিনয় করেছেন। ‘নবাব সিরাজদ্দৌলা’ ছবিতে অভিনয় করে বাংলার মুকুটহীন নবাবে পরিণত হন।