অপূর্ব লাল সরকার, আগৈলঝাড়া (বরিশাল) থেকে : বরিশালসহ দেশের দক্ষিানাঞ্চলে এগিয়ে চলছে চলতি মৌসুমের আমন আবাদ কার্যক্রম। অত্র অঞ্চলের ১১ টি জেলায় মোট ৮ লাখ ১৩ হাজার ৮’শ ১৬ হেক্টর জমিতে আবাদের লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে গতকাল পর্যন্ত আবাদ হয়েছে ৬ লাখ ৬ হাজার ৩’শ ২০ হেক্টর জমি।
আঞ্চলিক কৃষি সম্প্রসারন অধিদপ্তর সূত্র জানায়, মোট আবাদের মধ্যে স্থানীয় আবাদ হয়েছে ৩ লাখ ৮ হাজার ৬’শ ৫ হেক্টর ও উফশী আবাদ হয়েছে ২ লাখ ৯৭ হাজার ৬’শ ৭৭ হেক্টর জমিতে। এর মধ্যে বরিশাল জেলায় ১ লাখ ৫ হাজার ৯’শ ৫ হেক্টর, ঝালকাঠীতে ৩০ হাজার ১২ হেক্টর, বরগুনায় ৬০ হাজার ৫’শ হেক্টর, পিরোজপুরে ৪৭ হাজার ২’শ ৫ হেক্টর, পটুয়াখালীতে ১ লাখ ৩৮ হাজার ও ভোলায় ১ লাখ ২০ হাজার ৩’শ হেক্টর জমি।
অন্যদিকে ফরিদপুরে আবাদ হয়েছে ৫১ হাজার ৩’শ ৫০ হেক্টর, শরীয়তপুরে ৪ হাজার ১০ হেক্টর, রাজবাড়ীতে ৩৬ হাজার ৮’শ ৩৫ হেক্টর, মাদারীপুরে ৬ হাজার ৮’শ ৬০ ও গোপলগঞ্জে ৫ হাজার ৩’শ হেক্টর জমিতে আবাদ করা হয়েছে। প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের ফলে অতি জোয়ারের পানিতে অনেক কৃষকের বীজতলা নষ্ট না হলে আবাদ কার্যক্রম আরো এগোতো বলে কৃষি কর্মকর্তারা জানান।
কৃষি কর্মকর্তারা আরো জানান, ইতোমধ্যে ঘুর্নিঝড় মহাসীন ও একাধিক প্রাকৃতিক বিপর্যয়ে ক্ষতিগ্রস্ত অত্র অঞ্চলের বরিশাল, ভোলা, পটুয়াখালী ও বরগুনা জেলার ২ লাখ ৩৪ হাজার ৯’শ ২৫ জন কৃষককে আমন বীজ ও সার দেওয়া হয়েছে। জনপ্রতি ৫ কেজি করে আমন বীজ, ১০ কেজি এমওপি সার ও ২০ কেজি ডেপ সার বিনামূল্যে বিতরন করা হয়েছে। এর মাধ্যমে কৃষকরা অনেকটাই ঘুড়ে দাড়াতে সক্ষম হয়েছে বলে কর্মকর্তারা জানান।
এদিকে কৃষকরা জানিয়েছেন, একাধিকবার প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের ফলে বহু কৃষকের বীজতলায় পানি জমে নষ্ট হয়ে গেছে। তাই সরকারি বীজ থেকে সৃষ্ট বীজতলা রোপনে এখন ব্যাস্ত তারা। বিস্তৃত প্রান্তর জুড়ে দেখা যায় কৃষককুল চারা রোপন করছে। কোথাও কোথাও পরিবারের সদস্যদেরও দেখা যায় আমন আবাদে। ভোলার কৃষক আলতাফ, মানিক, ফজল ও মনির জানান, জোয়ারের পানি নেমে যাওয়ায় মাটিতে পলি জমে অনেক নরম হয়ে আছে। তাই চারা রোপনে বর্তমানে কোন বেগ পেতে হচ্ছেনা। আবহাওয়া অনুকুলে থাকলে তারা লাভবান হবেন বলে জানান।
এব্যাপারে আঞ্চলিক কৃষি সম্প্রসারন অধিদপ্তরের অতিরিক্ত পরিচালক খন্দকার সিরাজুল করিম জানান, বর্তমানে দক্ষিনাঞ্চল জুড়ে আমন আবাদ এগিয়ে চলছে। পুরো ভাদ্রমাস পর্যন্ত আবাদ চলবে। এছাড়া আমাদের পক্ষ থেকে কৃষকদের সব ধরনের পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।