ব্রেকিং নিউজ
Home | শিল্প সাহিত্য | ফিচার | পৃথিবীর বৃহত্তম গ্রাম বানিয়াচংয়ে পর্যটন ক্ষেত্রের অপার সম্ভাবনা

পৃথিবীর বৃহত্তম গ্রাম বানিয়াচংয়ে পর্যটন ক্ষেত্রের অপার সম্ভাবনা

ফরহাদ চৌধুরী, হবিগঞ্জ প্রতিনিধি, ৩ ডিসেম্বর, বিডিটুডে ২৪ডটকম ঃ পর্যটন ক্ষেত্রের অপার সম্ভাবনাময় ইতিহাস-ঐতিহ্যের লালন ভূমি ও প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে ভরপুর হবিগঞ্জের বানিয়াচং উপজেলা। এ উপজেলায় রয়েছে পৃথিবীর বৃহত্তম গ্রাম বানিয়াচং। আরও রয়েছে ঐতিহাসিক কমলারানীর দীঘি, ৬শ’ বছরের প্রাচীন বিথঙ্গলের আখড়া ও হাজার বছরের প্রাচীন মসজিদসহ অনেক পুরাকীর্তি। এসব দর্শনীয় স্থানগুলোতে দর্শনার্থীদের ভীর জমে। চমৎকার একটি পর্যটন কেন্দ্র গড়ে তোলার মতো সম্ভাবনা থাকা সত্ত্বেও আজ পর্যন্ত এখানে গড়ে ওঠেনি পর্যটন কেন্দ্রের কোন সুবিধা। অথচ একটু যতœ নিয়ে দর্শনীয় স্থানগুলোকে পর্যটন শিল্পের কাজে লাগানো গেলে বানিয়াচংয়ের অর্থনৈতিক চিত্র পাল্টে যেত। আর এখান থেকেই সরকারের কোটি টাকার রাজস্ব^ আয় করা সম্ভব হতো।

উপজেলার মধ্যভাগে বানিয়াচং গ্রামটি অবস্থিত। গ্রামটিকে পৃথক চারটি ইউনিয়ন পরিষদে বিভক্ত করা হয়েছে। এই গ্রামের নামেই নামকরণ করা হয়েছে বানিয়াচং উপজেলা। সাধারণত কয়েকটি পাড়া বা মহল্লা নিয়ে গঠিত হয় গ্রাম। কিন্তু বানিয়াচংয়ের ক্ষেত্রে এই সংজ্ঞা অচল। ১২০টি পাড়া নিয়ে গঠিত এক গ্রামে ১লাখ ২০হাজার মানুষের বসবাস।

তাছাড়া উপজেলার সরকারি সব অফিস-আদালতও এই গ্রামেই অবস্থিত। ৭কিলোমিটার দৈর্ঘ্য ও ৮ কিলোমিটার প্রস্থের বিশাল ভুখণ্ডটি মানুষের কাছে ঐতিহ্যের প্রতীক হিসেবে বিবেচিত। এক সময় এই বানিয়াচং এশিয়া মহাদেশের বৃহত্তম গ্রাম ছিল। আর তখন যুক্তরাষ্ট্রের শিকাগো ছিল পৃথিবীর বৃহত্তম গ্রাম হিসেবে স্বীকৃত। বর্তমানে শিকাগো নগরে পরিণত হওয়ায় বানিয়াচং পৃথিবীর বৃহত্তম গ্রাম হিসেবে পরিচিত হয়ে উঠেছে।

বাংলাদেশ সংস্কৃতিক মন্ত্রণালয় সারা বিশ্বে খোঁজ-খবর নিয়ে ২০০৪ সালের ৭ জুন সংস্কৃতিক বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব মোদাব্বির হোসেন চৌধুরী বানিয়াচং উপজেলা সভাকক্ষে অনুষ্ঠিত এক সেমিনারে বানিয়াচংকে পৃথিবীর বৃহত্তম গ্রাম হিসেবে আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দেন।

এক সময় লাউড় রাজ্যের রাজধানী ছিল বানিয়াচং। সেই সময় বানিয়াচং গ্রামে কমলারাণীর দীঘিসহ ৫ টি দীঘি খনন করেন। যা আজও কালের সাক্ষী হয়ে দাঁড়িয়ে আছে। ৬৬ একর আয়তন বিশিষ্ট কমলারাণীর দীঘি বাংলাদের দ্বিতীয় বৃহত্তম দীঘি হিসেবে স্বীকৃত। দীঘিকে ঘিরে দু’টি লোক কাহিনী প্রচলিতসহ চালু আছে নানারকম কিংবদন্তী। দীঘির পশ্চিম পাড়ে রয়েছে প্রায় ৬ শ’ বছরের প্রাচীন রাজবাড়ির ধ্বংসাবশেষ। মোগল আমলের নির্মিত বিবির দরগা মসজিদ, পুরান বাগ , ২ নং হাবেলি ও কালিকাপাড়ার মসজিদ। জয়কালি মন্দির, শ্যামবাউলের আখড়া প্রাচীন স্থাপত্যের নির্দেশন হিসেবে এখনো দন্ডায়নমান।

১৯৯৭ সালের ১৯ অক্টোবর তৎকালীন ও বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কমলারাণী দীঘির পাড়ের এলআর হাইস্কুল মাঠে এক জনসভায় ঐতিহাসিক ওই দীঘিকে ঘিরে বানিয়াচংকে পর্যটন কেন্দ্র করার ঘোষণা দেন। প্রধানমন্ত্রীর দেয়া সেই প্রতিশ্র“তির কোন বাস্থবায়ন হয়নি।

এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা দেবজিৎ সিংহ জানান, দেশের অনেক জায়গার তুলনায় পৃথিবীর বৃহত্তম গ্রাম হিসেবে পরিচিত বানিয়াচং ভ্রমণপিপাসুদের জন্য একটি আকর্ষণীয় স্থান। এখানে কমলারাণীর বিশাল দীঘিসহ দেখার মতো নানা রকম প্রাকৃতিক সৌন্দর্য ও অনেক পুরাকীর্তি রয়েছে। এই সাগরদিগীকে ঘিরে পর্যঠন কেন্দ্র গড়ে তোলা হলে প্রচুর পরিমান রাজস্ব আয় হবে।

x

Check Also

‘গ্রেটার সিলেট এসোসিয়েশন ইন স্পেন’ নির্বাচনে মুজাক্কির – সেলিম প্যানেল বিজয়ী

জিয়াউল হক জুমন, স্পেন প্রতিনিধিঃ সিলেট বিভাগের চারটি জেলা নিয়ে গঠিত গ্রেটার ...

পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীর সাথে পর্তুগাল আওয়ামী লীগের মতবিনিময় সভা

আনোয়ার এইচ খান ফাহিম ইউরোপীয় ব্যুরো প্রধান, পর্তুগালঃ পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মোঃ শাহরিয়ার ...