স্টাফ রিপোর্টার : হত্যার উদ্দেশ্যে হামলার ঘটনায় ওপর অভিযোগ নেই বরেণ্য শিক্ষাবিদ মুহম্মদ জাফর ইকবাল এবং তার স্ত্রী ইয়াসমিন হকের।
সিলেটের শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের বিশিষ্ট লেখক বুদ্ধিজীবীর ওপর হামলার পরদিন বরিবার ঢাকার সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে সাংবাদিকদেরকে এ কথা বলেন ইয়াসমিন হক।
ইয়াসমিন হক নিজেও পেশায় শিক্ষক। তিনিও শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে কর্মরত। তিনি বলেন, ‘দীর্ঘদিন থেকেই আমরা পুলিশের নিরাপত্তায় আছি। এ মুহূর্তে আমি প্রশাসন কিংবা সরকারকে দোষারোপ করতে চাই না। তাদের সর্বাত্মক সহযোগিতা ছিল। বিশেষ করে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে দ্রুত তাকে সিএমএইচে আনা হয়।’
জাফর ইকবাল ও ইয়াসমিন হককে হত্যার হুমকি এসেছে বারবার। আর দুই বছর ধরে তাদেরকে সার্বক্ষণিক নিরাপত্তা দেয়া হচ্ছে। শনিবার নিজ বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে হামলার সময় মুক্তমঞ্চেও তার পেছনে এক পাশেই ছিলেন পুলিশ সদস্যরা। আর ঠিক পেছনেই ছিলেন হামলাকারী যুবক।
হামলার আগে তোলা কিছু ছবিতে দেখা যায়, দুইজন পুলিশ সদস্য মোবাইল ফোন ঘাঁটাঘাঁটি করছেন। আর হামলার পর পুলিশ সদস্যরা হামলাকারীকে আটকাতে না পারলেও সাধারণ ছাত্ররা ঠিকই তাকে আটকে ফেলে।
হামলার পরপরই পুলিশের ভূমিকা নিয়ে ক্ষোভ জানায় বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্ররা। সিলেটের পুলিশ কর্মকর্তারা তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়ার কথাও জানান।
পরদিন রবিবার সকালে রাজধানীতে এক অনুষ্ঠানে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল দাবি করেন, জাফর ইকবালের নিরাপত্তায় কোনো ঘাটতি ছিল না।
নিরাপত্তায় ত্রুটি নিয়ে কোনো অভিযোগ নেই জাফর ইকবালের স্ত্রী ইয়াসমিন হকেরও। তিনি বলেছেন, ‘আমার টোটালি ভরসা আছে, তারা যেটা করছে, সেটা ভালো হবে।…সেখানে পুলিশ ছিল। তারা তাদের পক্ষে যা করার তো করেছেন। আই ডোন্ট ওয়ান্ট টু ব্লেম এনিওয়ান।’
শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের এই অধ্যাপক বলেন, ‘২৪ ঘণ্টাই আমাদের সঙ্গে পুলিশ থাকে। মঞ্চেও ছিল।…আমি ফিল করি না, একটা ঘটনার পর সঙ্গে সঙ্গে গভর্নমেন্টকে ব্লেম করব।’
‘স্টেজে পুলিশ ছিল, একজন যদি হঠাৎ ছুরি হাতে হামলা করে… সেটা তো একটা মুক্ত মঞ্চ, সামনে মাঠ, শত শত স্টুডেন্ট ছিল, সবাই উৎসব করছে। এখন হঠাৎ যদি কেউ হামলা করে তাহলে পুলিশের কী করার আছে?
‘আমাদেরকে তো কেবল দুই বছর নয়, বছর বছর ধরেই তারা (পুলিশ) নিরাপত্তা দিচ্ছে। যখনই আমাদের ওপর হুমকি এসেছে, ততবারই তারা আমাদের পাশে দাঁড়িয়েছে। আমি কি সব কিছু বন্ধ করে জেলে থাকা আরম্ভ করব?’।
ইয়াসমিন হক জানান, হামলার পর জাফর ইকবাল নিজেই ফোন করে তাকে এই খবর জানান।
‘তিনি আমাকে বলেন, আমি চাই না তুমি টিভি-মিডিয়ার মাধ্যমে সংবাদ পাও। অনেক ব্লিডিং হচ্ছে। পরে যদি কথা বলতে না পারি, সেজন্য তোমাকে ফোন দিয়েছি। আমি পুরোপুরি ভালো আছি। তুমি ছাত্রদেরকে বলো তারা যেন উত্তেজিত না হয়।’
ঢাকা সিএমএইচে চিকিৎসার বিষয়ে ইয়াসমিন হক বলেন, ‘এখানে তার ঠিকমতো চিকিৎসা হচ্ছে। এখানকার চিকিৎসকদের প্রতি আমাদের আস্থা আছে। তাকে বিদেশে নেওয়ার প্রয়োজন নেই।’