
লালগালিচা সংবর্ধনাসহ বিমানবন্দরের আনুষ্ঠানিকতায় আরও থাকছে ফুলেল শুভেচ্ছা এবং সুসজ্জিত দলের ‘গার্ড অব অনার’ প্রদান। তিনদিনের রাষ্ট্রীয় সফরের সময় তিনি সোনারগাঁও হোটেলে অবস্থান করবেন।
২০১২ সালের জুলাইয়ে রাষ্ট্রপতি হওয়ার পর এটাই প্রণব মুখার্জির প্রথম বিদেশ সফর। প্রণব মুখার্জির সফরকে বর্ণিল করতে রাজধানী ঢাকার প্রধান প্রধান সড়ককে বাংলাদেশ ও ভারতের পতাকায় সাজানো হয়েছে। বিমানবন্দর থেকে শুরু করে বিভিন্ন সড়কে রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখার্জিকে স্বাগত জানিয়ে শোভা পাচ্ছে ব্যানার ও প্রতিকৃতি।
সফরকালে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ককে চূড়ায় নিয়ে যাওয়া এবং অমীমাংসিত ইস্যু নিষ্পত্তির প্রশ্নে ভারতের অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করবেন তিনি। স্ত্রী শুভ্রা মুখার্জিও তার সঙ্গে আসছেন। শুভ্রাকে নিয়ে নড়াইলের ভদ্রবিলায় আদি শ্বশুরবাড়ির ‘জামাই আদরের’ স্বাদ নেয়ার সুযোগ থেকে তাকে বঞ্চিত করছেন না প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। প্রধানমন্ত্রীর ঘনিষ্ঠ ভারতের এই প্রবীণ নেতার শিলাইদহে রবীন্দ্রনাথের কুঠিবাড়িতে স্মৃতিমগ্নতায় ডুবে থাকার আয়োজনও থাকছে। প্রণব মুখার্জির আগে ১৯৭৪ সালে ভারতের তদানীন্তন রাষ্ট্রপতি ভি ভি গিরি বাংলাদেশ সফর করেছিলেন।
বাংলাদেশ মনে করে, প্রণব মুখার্জির এই সফরের মাধ্যমে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক নতুন মাত্রা লাভ করবে। জামায়াতের ডাকা হরতালের মধ্যেও প্রণব মুখার্জির সফরকে নির্বিঘ্ন করতে সর্বোচ্চ নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা হয়েছে।
ঢাকায় আসার পর প্রণব মুখার্জি দুপুরেই সাভার স্মৃতিসৌধে মুক্তিযুদ্ধের অমর শহীদদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করবেন। সেখানে একটি গাছের চারা রোপণ ও পরিদর্শন বইয়ে স্বাক্ষর করবেন তিনি।
সন্ধ্যায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সোনারগাঁও হোটেলে তার সঙ্গে বৈঠক করবেন। দ্বিপক্ষীয় ইস্যু, বিশেষ করে বাণিজ্য ও বিনিয়োগ সহযোগিতা, কানেকটিভিটি, পানিসম্পদ ব্যবস্থাপনা, বিদ্যুৎ, সীমান্ত ব্যবস্থাপনা, নিরাপত্তা, সংস্কৃতি, শিক্ষা, জনগণের পর্যায়ে যোগাযোগ প্রভৃতি ইস্যুতে তারা ব্যাপক আলোচনা করবেন বলে জানা গেছে।
ভারতের রাষ্ট্রপতির সঙ্গে বিরোধীদলীয় নেতা ও বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াও সাক্ষাৎ করবেন। তবে প্রণব মুখার্জির জাতীয় সংসদে ভাষণ দেয়ার পূর্বনির্ধারিত কর্মসূচি বাতিল করা হয়েছে। স্পিকার আবদুল হামিদ অ্যাডভোকেট, অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডা. দীপু মনি পৃথকভাবে তার সঙ্গে সাক্ষাৎ করবেন।
একাত্তরের মহান মুক্তিযুদ্ধের অকৃত্রিম বন্ধু প্রণব মুখার্জিকে ‘বাংলাদেশ স্বাধীনতা সম্মাননা’ প্রদান করা হবে। রাষ্ট্রপতি মো. জিল্লুর রহমান ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বঙ্গভবনে অনুষ্ঠেয় এই সম্মাননা অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকবেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ৪৭তম সমাবর্তন অনুষ্ঠানে প্রণব মুখার্জিকে সম্মানসূচক ‘ডক্টর অব ল’ উপাধি দেয়া হবে।