স্টাফ রিপোর্টার : দুর্নীতির মামলায় বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার সাজা হলে তিনি কোথায় থাকবেন-এ নিয়ে জল্পনাকল্পনা মধ্যে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল বিষয়টি কারা অধিদপ্তরের ওপর ছেড়ে দিয়েছেন।
বৃহস্পতিবার রায় ঘোষণার আগের দিন সচিবালয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে এ কথা জানান মন্ত্রী।খালেদা জিয়ার সাজা হলে তার অবস্থান কোথায় হবে সে বিষয়ে গত কয়েকদিন ধরেই আলোচনা চলছে। বিভিন্ন গণমাধ্যমের প্রতিবেদনে ঢাকার পুরনো কেন্দ্রীয় কারাগার, কাশিমপুর কারাগারে ধোয়ামোছার খবর এসেছে।
এই পরিস্থিতিতে সচিবালয়ে নিজ দপ্তরে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর কাছে সাংবাদিকরা বিষয়টি নিয়ে তার কাছেই জানতে চান।
জবাবে মন্ত্রী বলেন, ‘তার কী হবে তা কোর্টই (আদালত) জানেন, আমরা বলতে পারি না। তাকে রাখতে কোর্ট যেভাবে আদেশ দেবেন আমরা সেভাবেই রাখব।’
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘তিনি সাবেক প্রধানমন্ত্রী, জেল কোড অনুযায়ী যেভাবে তাকে রাখার নিয়ম আমরা ঠিক সেভাবেই তাকে রাখব।’
স্বামী জিয়াউর রহমানের মৃত্যুর পর রাজনীতিতে এসে তিন যুগে এখন পর্যন্ত দুইবার গ্রেপ্তার হয়েছেন খালেদা জিয়া। এর মধ্যে এরশাদ সরকারের আমলে আশির দশকে তাকে একবার গৃহবন্দী করা হয়। আর সেনা-সমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে গ্রেপ্তারের পর জাতীয় সংসদের এলাকার একটি ভবনকে কারাগার ঘোষণা করে সেখানে রাখা হয় তাকে।
বিভিন্ন গণমাধ্যমের প্রতিবেদন অনুযায়ী সাজা হলে খালেদা জিয়াকে পুরান ঢাকার নাজিমউদ্দিন রোডের কেন্দ্রীয় কারাগারের চার তলা ভবনের ‘শিশু ডে কেয়ার’ এর নিচতলা ও দ্বিতীয় তলার দুটি কক্ষ এবং গাজীপুরের কাশিমপুরের কারাগারের মহিলা কারাগারে (কারাগার-৩) রাখার চিন্তাভাবনা চলছে। এর বাইরে গুলশানে কোনো একটি বাড়িতে সাব জেল ঘোষণা করেও রাখার চিন্তাভাবনা আছে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের নিরাপত্তা বাহিনী, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অধীন যে সংস্থাগুলো আছে, অধিদপ্তর আছে, তারা সব সময় যে কোনো পরিস্থিতি মোকাবেলায় প্রস্তুত থাকে।’
কোন জেলে খালেদা জিয়াকে রাখা হবে- আবার এমন প্রশ্নে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘পরে আপনারা সব জানতে পারবেন। আমি স্পষ্ট করে বলেছি, কারা অধিদপ্তর কোথায়, কীভাবে রাখবেন- এটা তাদের ব্যাপার। তারা সব সময়ই প্রস্তুত থাকেন যে কোনো পরিস্থিতির জন্য।’
রায় নিয়ে দেশে উত্তেজনার বিষয়ে এক প্রশ্নে মন্ত্রী বলেন, ‘কেউ যদি নাশকতা করতে চায়, ভাঙচুর করতে চায়, ২০১৩-১৪ সালের মতো কেউ জ্বালাওপোড়াও করতে চায়, একটা বিভ্রান্তি সৃষ্টি করতে চায়, মানুষকে জিম্মি করতে চায়, মানুষের রাস্তাঘাট বন্ধ করতে চায়, আমরা অবশ্যই সেটা প্রতিহত করব।’
সরকারের কাছে নাশকতার পরিকল্পনার কোনো তথ্য আছে কি না-এমন প্রশ্নে কামাল বলেন, ‘আমি আগেও বলেছি, আমাদের আইনশৃঙ্খলাবাহিনী অনেক দক্ষ। তারা ফেইসবুকসহ বিভিন্ন মাধ্যমে অনেক তথ্য আদান-প্রদানের বিষয়ে জানতে পেরেছে। তাই এই পদক্ষেপ। এটাকে একটা প্রস্তুতি আপনারা বলতে পারেন।’
‘সোহেলকে গ্রেপ্তার করেনি পুলিশ’
ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির সভাপতি হাবিব-উন-নবী খান সোহেল পুলিশ গ্রেপ্তার করেনি বলেও জানান স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী।
মঙ্গলবার ভোরে সোহেলকে রাজধানীর মালিবাগের একটি বাসা থেকে নিরাপত্তা বাহিনীর পরিচয়ে ধরে নেয়া হয় বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।
আইন অনুযায়ী কাউকে গ্রেপ্তার করা হলে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে আদালতে উপস্থাপনের নিয়ম। কিন্তু সোহেলকে আটকের বিষয়টি স্বীকারই করছে না পুলিশ।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা এখন পর্যন্ত কনফার্ম, আমাদের নিরাপত্তা বাহিনী তাকে (সোহেল) অ্যারেস্ট করেনি। …হতে পারে তিনি নিজেই আত্মগোপন করেছেন, নতুন কোনো কৌশল তিনি অবলম্বন করতে পারেন।’