ব্রেকিং নিউজ
Home | জাতীয় | ঢাবি ছাত্রীকে যেভাবে টার্গেট করে ধর্ষক মজনু

ঢাবি ছাত্রীকে যেভাবে টার্গেট করে ধর্ষক মজনু

স্টাফ রির্পোটার :  ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এক ছাত্রীকে ধর্ষণের ঘটনায় একমাত্র অভিযুক্ত মজনুকে গ্রেপ্তার করেছে র‌্যাব। জিজ্ঞাসাবাদে তিনি ঘটনার বিস্তারিত বিবরণ দিয়েছেন। অকপটে স্বীকার করেছেন সব। এ ব্যাপারে তার কোনো অনুশোচনাও নেই বলে জানিয়েছে র‌্যাব। এমনকি এই ঘটনাটি যে দেশজুড়ে তোলপাড় সৃষ্টি করেছে সেটা সম্পর্কেও বেখবর ছিলেন মজনু।

বুধবার দুপুরে রাজধানীর কারওয়ান বাজার র‌্যাব মিডিয়া সেন্টারে মজনুর উদ্ধৃতি দিয়ে ঘটনার বর্ণনা দেয় র‌্যাব। বাহিনীর আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক লে. কর্নেল সারওয়ার বিন কাশেম ব্রিফ করেন সাংবাদিকদের।

সারওয়ার বিন কাশেম বলেন, ‘ছাত্রী ধর্ষণের ঘটনায় উত্তাল হয়ে উঠে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ সারা দেশ। এই ঘটনায় আমরাও মর্মাহত। মূল আসামিকে গ্রেপ্তারে র‌্যাবের সমস্ত ব্যাটালিয়ন একসঙ্গে কাজ শুরু করে। যার প্রথম ধাপে ছিল র‌্যাব-১।’

‘গোয়েন্দা সূত্রে আমরা জানতে পারি বুধবার ভোরে রাজধানীর শেওড়া রেল স্টেশনে অবস্থান করছেন অভিযুক্ত মজনু। পরে সেখান থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। উদ্ধার করা হয় ভিকটিমের ব্যাগ, মোবাইল এবং পাওয়ার ব্যাংক।’

র‌্যাব কর্মকর্তা জানান, গ্রেপ্তারের পরপরই মজনু প্রাথমিক স্বীকারোক্তিতে এই ঘটনার সঙ্গে সম্পৃক্ত থাকার কথা স্বীকার করেন। তার গ্রামের বাড়ি নোয়াখালীর হাতিয়ায়।

যেভাবে ঢাকায় আসেন মজনু

দশ বছর আগে ঢাকায় এসে জীবিকা নির্বাহ শুরু করেন মজনু। এর মধ্যে তার স্ত্রী মারা যায়। এরপর বিভিন্ন ধরনের অপকর্মের সঙ্গে লিপ্ত হতে শুরু করেন। মজনু নিরক্ষর।

সিরিয়াল রেপিস্ট

র‌্যাব জানায়, দিনমজুর ও হকারির পাশাপাশি মজনু সিরিয়াল ধর্ষক হয়ে ওঠেন। রাস্তা থেকে বিভিন্ন সময় প্রতিবন্ধী নারী ও ভাসমান নারীদের নির্জনে ধরে নিয়ে ধর্ষণ করতেন।

ঢাবি ছাত্রীকে যেভাবে টার্গেট করে

৫ জানুয়ারি ভিকটিম বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজস্ব পরিবহনে ভুল করে কুর্মিটোলা এলাকায় নেমে পড়েন। এসময় হেঁটেই কুর্মিটোলা তার বান্ধবীর বাসায় ফিরছিলেন। তার পেছনে নজর রাখছিলেন মজনু। নির্জন পথ দিয়ে যাওয়ার সময় মজনু তার গলায় চাপ দিয়ে জাপটে ধরে নিয়ে যান আড়ালে। ছাত্রীকে মজনু বারবার ঘুষি মারছিলেন এবং গলা টিপে হত্যার হুমকি দিচ্ছিলেন। এতে মানসিকভাবে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েন ওই ছাত্রী এবং অচেতন হয়ে পড়েন। যখন হুঁশ ফিরে আসে তখন তিনি মজনুর কাছ থেকে নিজেকে ছাড়িয়ে নিয়ে রাস্তার অপর প্রান্তে চলে যান। সেখান থেকে পালিয়ে বান্ধবীর বাসায় যান। এসময় মজনু ছাত্রীর ফেলে যাওয়া ব্যাগ, মোবাইল, পাওয়ার ব্যাংক নিয়ে পালিয়ে যান।

মোবাইল বিক্রি করে ধরা

ছাত্রীর মোবাইল নিয়ে পালিয়ে গিয়ে মজনু তার পূর্ব পরিচিত এক নারীর কাছে বিক্রি করেন। এরপর এয়ারপোর্ট রেল স্টেশনে চলে যান। সেখান থেকে নরসিংদী গিয়ে রাত যাপন করেন। মঙ্গলবার নরসিংদী থেকে বনানী রেলস্টেশনে আবার ফিরে আসেন এবং সেখানেই রাত যাপন করেন।

ক্লু-লেস অপারেশন

র‌্যাব জানায়, এটি একটি ক্লু-লেস অপারেশন ছিল। আশেপাশে কোনো সিসিটিভি ক্যামেরা ছিল না। কোনো ধরনের তথ্যও ছিল না। কিছু বর্ণনার সূত্র ধরে প্রথমে খায়রুল নামে একজনকে গ্রেপ্তার করা হয়। তার দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে অরুণা নামে এক নারীর কাছ থেকে মোবাইল উদ্ধার করা হয়।

তথ্য এবং বিবরণ অনুযায়ী অরুণা নামের ওই নারীকে গ্রেপ্তার করা হয়। অরুণার তথ্যের ভিত্তিতে মজনু এই ঘটনা ঘটিয়েছেন বলে নিশ্চিত হয় র‌্যাব। পরে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।

অনুশোচনা নেই মজনুর

ধর্ষণের মতো ঘটনা ঘটালেও অনুশোচনা নেই এই অভিযুক্তের। বিষয়টি নিয়ে দেশব্যাপী আলোড়ন চললেও জানতেন না তিনি। মাদক সেবনে জড়িত থাকায় নিজের মধ্যে কোনো সংশোধনচেষ্টাও ছিল না। গ্রেপ্তারের পর ধর্ষণের ঘটনা অকপটে স্বীকার করেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

*

x

Check Also

মগড়া নদীর ভাঙ্গনে বিলীনের পথে বেশ কয়েকটি পরিবারের বসত ভিটে ও ঘরবাড়ি

সুদর্শন আচার্য্য, মদন (নেত্রকোণা) ঃ নেত্রকোণা মদন পৌর সদরের ১,২,৩,৮ ও ৯নং ...

মদনে দাতা সদস্যের স্বাক্ষর জালিয়াতি করে কমিটি গঠনের অভিযোগ উঠেছে মাদ্রাসার সুপারের বিরুদ্ধে

সুদর্শন আচার্য্য, মদন (নেত্রকোণা) ঃ নেত্রকোণা মদন উপজেলার বালালী বাঘমারা খন্দকার আব্দুর ...