মাহতাব উদ্দীন রবিন, জাবি প্রতিনিধি : জাহাঙ্গীরনগর বিশ্বদ্যিালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক আনোয়ার হোসেনের বিরুদ্ধে আবারো অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। এক সিনিয়র শিক্ষকের জ্যেষ্ঠতা লঙ্ঘন করে অনায্যভাবে উপাচার্যের অনুগত কনিষ্ঠ শিক্ষককে ভাল মানের সি-৫৪ নং বাসা বরাদ্দ দেয়া হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন দর্শন বিভাগের শিক্ষক ড. মোস্তফা নাজমুল মানসুর।
সিদ্ধান্ত পরিবর্তনের দাবিতে বৃহস্পতিবার উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক আফসার আহমেদের কার্যালয়ের সামনে সকাল ১০টা থেকে বিকেল তিনটা পর্যন্ত অবস্থান গ্রহন করেন তিনি। তার সাথে অবস্থান করছেন ভূগোল বিভাগের শিক্ষক মো. নুরুল ইসলাম। আন্দোলনের সাথে একাতœতা প্রকাশ করেছে উপাচার্যের পদত্যাগের দাবিতে আন্দোলনরত শিক্ষক ফোরাম। সিদ্ধান্ত পরিবর্তন না হওয়া পর্যন্ত আগামী ২৪ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক আফসার আহমেদের কার্যলয় কক্ষের সামনে অবস্থান কর্মসূচী ঘোষণা করেন তিনি। এ সময়ের মধ্যে দাবি আদায় না হলে ২৫ সেপ্টেম্বর বিশ্ববিদ্যালয় পরিবারের সাথে আলোচনা করে পরবর্তী কর্মসূচী নির্ধারন করবেন বলে জানিয়েছেন তিনি। একই সাথে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি কর্তৃক উপাচার্য অবাঞ্ছিত হওয়ায় তার কক্ষের সামনে অবস্থান না করে বাসা বরাদ্দের বিষয়টি যেহেতু উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) দেখে তাই অধ্যাপক আফসার আহমেদের কক্ষের সামনে তিনি অবস্থান করবেন বলে জানান।
আন্দোলনরত শিক্ষক জানান, বাসা বরাদ্দ দেয়ার ক্ষেত্রে বিশ্ববিদ্যালয়ের যে নীতিমালা রয়েছে তার ১,৩-৮ ও ১২ নং ধারাসমূহ লঙ্ঘন করা হয়েছে। বাসা বরাদ্দের নীতিমালায় বর্ণিত এ ধারাগুলোর মধ্যে যে কোনটিকে বিবেচনায় আনলে কোনো কনিষ্ঠ শিক্ষক বাসা বরাদ্দ পেতেন না, তিনিইি পেতেন বলে জানান তিনি। বাসাটি বরাদ্দ পেয়েছেন একই বিভাগের বামরাজনীতির সাথে জড়িত শিক্ষক রায়হান রাইন। উপাচার্যের বিশেষ বিবেচনায় বাসাটি তিনি বরাদ্দ পেয়েছেন বলে জানা গেছে। বর্তমানে উপাচার্য পদত্যাগ বিরোধী আন্দোলনের সাথে জড়িত আছেন তিনি।
আন্দোলনরত শিক্ষক জানান, শুধুমাত্র আনুগত্যের ভিত্তিতে একের পর এক অনায্য ও অনৈতিকভাবে উপাচার্য অধ্যাপক আনোয়ার হোসেন তার অনুগত শিক্ষকদের সুবিধা দিচ্ছেন, আর তারা নিচ্ছেও বেশ। পরিস্থিতি এমন দাড়ালো একদিকে শিক্ষামন্ত্রনালয় কর্তক গঠিত তদন্ত কমিটির সদস্যগন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের তৃতীয় তলায় উপাচার্যের অনিয়মের বর্ণনা দিচ্ছেন, অন্যদিকে উপাচার্য একই ভবনের দ্বিতীয় তলায় বসে একের পর এক অনিয়ম করে চলছেন আর তার অনুগতরা সেই অনিয়ম থেকে প্রাপ্ত সুবিধার ভাগ নেওয়ার জন্য দ্বিতীয় তলার কক্ষগুলোতে ছুটছেন। উপাচার্য ও তার অনুগতদের এহেন কার্যক্রমকে অনেকেই ‘আউল্যাইয়া দে মা, লুইটা পুইটা খাই’ বলে অভিহিত করেছেন বলে জানান আন্দোলনরত শিক্ষক।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে উপাচার্য অধ্যাপক আনোয়ার হোসেন ও উপ-উপচার্য অধ্যাপক আফসার আহমেদের মোবাইলে যোগাযোগ করা হলে তারা কেউই ফোন রিসিভ করেননি।
এদিকে উপাচার্য অধ্যাপক আনোয়ার হোসেনের অনিয়ম বিষয়ে জানতে এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের চলমান সংকট সমাধানের লক্ষ্যে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের ও কর্মকর্তাদের সাথে বৈঠক করেছে শিক্ষা মন্ত্রনালয় গঠিত তদন্ত কমিটি। বৃহস্পতিবার বেলা সাড়ে এগারটা হতে বিকাল ৪টা পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেট কক্ষে সংশ্লিষ্ট বিষয়ে তথ্য গ্রহন করেন তারা।