গোপালগঞ্জ প্রতিনিধি : গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়ায় স্কুল ছাত্রীকে ধর্ষণে বাধা দেয়ায় ৩ জনকে পিটিয়ে আহত করা হয়েছে বলে আদালতে নালিশী পিটিশন দায়ের করা হয়েছে।
কোটালীপাড়া উপজেলার সোনটিয়া গ্রামের সামাদ ফরাজী (৪০) গত ২৪ সেপ্টেম্বর গোপালগঞ্জ নারী শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে এ পিটিশনটি দায়ের করেন। ট্রইব্যুনালের বিচারক গোপালগঞ্জের জেলা ও দায়রা জজ মোঃ দলিল উদ্দিন কোটালীপাড়া থানাকে এ ব্যাপারে তদন্ত পূর্বক ৭ কর্ম দিবসের মধ্যে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দিয়েছে বলে বাদী পক্ষের আইনজীবি কদরে আলম খান (আক্তার) জানিয়েছেন।
পিটিশনে বলা হয়েছে, সামাদ ফরাজীর মেয়ে রওশন আরা মডেল স্কুলের ৭ম শ্রেণির ছাত্রী। তাকে প্রতিবেশী রূপাই শাহের ছেলে মাঈনুর শাহ (২৩) উত্ত্যক্ত করে আসছিলো। এর প্রতিবাদ করায় মাঈনুর শাহ ওই স্কুল ছাত্রীকে ধর্ষণের হুমকি দেয়। গত ১৯ সেপ্টেম্বর মাঈনুর শাহ ওই স্কুল ছাত্রীকে একা পেয়ে ঘরে ঢুকে তাকে ধর্ষণের চেষ্টা করে। স্কুল ছাত্রীর চিৎকার শুনে তার মা লাকি বেগম (৩৫) ও চাচী সীমা বেগম (২৬) পাশের ঘর থেকে ঘটনা স্থলে উপস্থিত হয়ে মাঈনুরকে আটক করেন।
বিষয়টি টের পেয়ে মাঈনুরের পিতা রূপাই শাহ (৫৪), ভাই রেহান শাহ (৩০), সাকিব শাহ (২০) ও ভাবী লিমা বেগম (২৫) লাঠিসোটা নিয়ে ওই ছাত্রীদের বাড়িতে হামলা করে। হামলাকারীরা স্কুল ছাত্রী, তার মা ও চাচীকে পিটিয়ে আহত করে মাঈনুরকে ছিনিয়ে নেয়। আহত ৩ জনকে কোটালীপাড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। পরে ওই ছাত্রীর আবস্থার অবনতি হলে তাকে গোপালগঞ্জ আড়াই শ’ বেড জেনারেল হাসপতালে ভর্তি করা হয়।
সামাদ ফরাজী অভিযোগ করেন, মারপিট, ধর্ষণ চেষ্টার বিষয়ে থানা বা কোর্টে অভিযোগ করলে আমার পরিবারের সদস্যদের মারপিট, খুন জখম করা হবে বলে রূপাই শাহ হুমকি দিচ্ছে। বিষয়টি তারা মীমাংসার জন্যও চাপ দিচ্ছে বলে তিনি অভিযোগ করেন।
অভিযুক্ত মাঈনুর শাহর পিতা রূপাই শাহ স্কুল ছাত্রী সহ ৩ জনকে মারপিটের কথা স্বীকার করে বলেন, ধর্ষণ চেষ্টার কোন ঘটনাই ঘটেনি। এ ছাড়া ওই দিন আমি বাড়ি ছিলাম না। ঘটনার দিন সামাদের স্ত্রী আমার ঘরের পর্দা ছিড়ে ফেলে। এ নিয়ে মহিলাদের মধ্যে হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। আমার পরিবারের সদস্যদের হয়রানী করতেই ছামাদ মিথ্যা ধর্ষণ চেষ্টা ও মারপিটের অভিযোগ দিয়েছে। তারপরও বিষয়টি আমরা সামাজিক ভাবে মীমাংসার চেষ্টা করছি।
কোটালীপাড়া থানার ওসি মোহাম্মদ কামরুল ফারুক বলেন, এখনো আমাদের হাতে কোর্টের আদেশ এসে পৌঁছায়নি। ২/১ দিনের মধ্যে আদেশ আমাদের হাতে এসে পৌঁছাবে। আশা করছি ৭ কর্ম দিবসের মধ্যেই তদন্ত করে প্রতিবেদন আদালতে দাখিল করতে পারবো।