কুদরতে খোদা সবুজ, কুষ্টিয়া : কুষ্টিয়ায় বেড়েই চলেছে ধর্ষণের ঘটনা। বর্তমানে জেলায় ধর্ষণের ঘটনা নিত্য নৈমেত্তিক ব্যাপার হয়ে দাড়িয়েছে। সম্প্রতি গ্রেফতার হাওয়া পান্না মাস্টার ও তার সহযোগীদের দেড় শতাধিক ছাত্রীকে নিজেদের বিকৃত যৌন লালসার শিকার বানানোর ঘটনা দেশ জুড়ে বেশ অলোচিত। দিন দিন কুষ্টিয়া জেলা নারীদের জন্য অতঙ্কের নগরীতে পরিণত হচ্ছে। জানা যায়, চলতি বছরের ৫ আগস্ট পর্যন্ত কুষ্টিয়ায় ১৪ জন নারী ধর্ষণের শিকার হয়েছেন। অপরাধীদের বিকৃত যৌন লালসার শিকার হয়েছেন শিশু থেকে যুবতী সবাই। এদের মধ্যে ধর্ষণের পর হত্যার ঘটনাও রয়েছে বেশ কিছু। সুত্র জানায়, চলতি বছরের গত ১২ জানুয়ারি নানা বাড়ি থেকে বাড়ি ফেরার পথে গণধর্ষণের শিকার হয় এক মাদ্রাসা ছাত্রী। কুষ্টিয়া সদর উপজেলার আলামপুর ইউনিয়নের ভাদালিয়া গ্রামের পার্শ্ববর্তী তার নানা বাড়ি থেকে নিজ বাড়ি ফিরছিল। এ সময় হলবিলের মাঠ এলাকায় দুর্বৃত্ত ওই মাদ্রাসা ছাত্রীকে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে পালাক্রমে ধর্ষণ করে। গত ২৫ জানুয়ারি কুষ্টিয়ার দৌলতপুর উপজেলার আড়িয়া গ্রামের হাশিয়ারা খাতুন (১২) বছরের এক স্কুল ছাত্রীকে ধর্ষণের পর হত্যা করে দুর্বৃত্তরা। উপজেলার আড়িয়া ইউনিয়নের ইউসুফপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের তৃতীয় শ্রেণির ওই ছাত্রীর মৃত লাশ উদ্ধার করা হয় একটি ইট ভাটার পুকুর থেকে। সে দিঘলকান্দি গ্রামের হাসেম আলীর কন্যা। গত ১৬ ফেব্রুয়ারী কুষ্টিয়ায় দ্বিতীয় শ্রেনীর এক স্কুল ছাত্রী গৃহশি কর্তৃক ধর্ষনের শিকার হয়। কুষ্টিয়া সদর উপজেলার উজানগ্রাম ইউনিয়নের মাতপুর গ্রামে ওই স্কুল ছাত্রীর নিজ বাড়িতে গৃহশিকের দ্বারা ধর্ষনের শিকার হয়। গত ১২ মার্চ কুষ্টিয়ায় তানিয়া রহমান মৌ (১৬) নামে এক স্কুলছাত্রীকে ধর্ষণের পর শ্বাসরোধ করে হত্যা করে। শহরের জিকেঘাট এলাকা থেকে মৌর মৃতদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। মৌ জিকেঘাট এলাকার মাছ ব্যবসায়ী মজিবর রহমানের মেয়ে। গত ৩১ মার্চ কুষ্টিয়ার দৌলতপুরে উপজেলার প্রাগপুর ইউনিয়নের পশ্চিমপাড়া এলাকায় দুলাভাইয়ের বাড়িতে বেড়াতে এসে এক কিশোরী ধর্ষণের স্বীকার হয়। গত ২২ এপ্রিল কুষ্টিয়ার ভেড়ামারা উপজেলার বাহিরচর ইউনিয়নের হঠাৎপাড়ায় এক লিচু বাগানে শাপলা (২৩) নামের এক গৃহধূকে ধর্ষনের পর হত্যা করে দুর্বৃত্ত। শাপলা বাহিরচর ইউনিয়নের হঠাৎপাড়া গ্রামের রমজান আলীর প্রথম স্ত্রী। গত ৭ মে কুষ্টিয়ার মিরপুর উপজেলার মশান কেউপুর গ্রামে দরিদ্র ভ্যান চালকের কন্যা ৬ষ্ট শ্রেণীর এক ছাত্রী (১৩) ধর্ষনের শিকার হয়। উপজেলার কেউপুর গ্রামের ভ্যানচালকের মেয়ে প্রাকৃতিক কাজ সারার জন্য বাড়ির বাইরে গেলে ওই গ্রামের ঝন্টু মালিথার ছেলে রানা তার মুখে রুমাল চেপে ধরে পার্শবর্তী মনিরুলের পানবরজে নিয়ে র্ধষন করে পার্শবর্তী আম বাগানে ফেলে রেখে পালিয়ে যায়। গত ২৪মে কুষ্টিয়ার কুমারখালী উপজেলার পল্লীতে প্রথম শ্রেণীর এক স্কুল ছাত্রী ধর্ষনের শিকার হয়। উপজেলার কয়া ইউনিয়নে বাড়াদি গ্রামের হায়দার আলীর ছেলে রাকিবুল ইসলাম একই গ্রামের ছয় বছর বয়সী শিশু কন্যাকে পাশের একটি েেত ডেকে নিয়ে ধর্ষণ করে। গত ২৮ মে কুষ্টিয়ার সদর উপজেলার হরিণারায়নপুর ইউনিয়নের শিবপুর গ্রামের ১১ বছরের এক মাদ্রাসা ছাত্রী ধর্ষণের স্বীকার হয়। উপজেলার শিবপুর গ্রামের শাজাহান কসাইয়ের ছোট ছেলে হরিনারায়নপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ৯ম শ্রেণীর ছাত্র শাকিল ওই মাদ্রাসা ছাত্রীর সাথে গোপনে অনৈতিক সম্পর্ক স্থাপন করে। একাধিক বার শারিরীক মেলামেশার কারনে গর্ভবতি হয়ে পড়ে ওই মাদ্রাসা ছাত্রী। গত ২জুন বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে এক যুবতীকে দু’বন্ধু মিলে রাতভর পালাক্রমে ধর্ষন করে। উপজেলার খলিষাকুন্ডি এলাকায় এঘটনা ঘটে। গত ১৫ জুন কুষ্টিয়া শহরতলী চৌড়হাস ক্যানেল পাড়ায় চতুর্থ শ্রেনীর এক স্কুল ছাত্রীকে (১২) একশ টাকার লোভ দেখি পাশের বাড়িতে নিয়ে রাতভর ধর্ষন করে একই এলাকার আক্তার কশাই (৫৫) নামে এক লম্পট। গত ৩ জুলাই কুষ্টিয়ার দৌলতপুর উপজেলার পিয়ারপুর ও ফিলিপনগর ইউনিয়নের পৃথক পল্লীতে এক দৃষ্টি প্রতিবন্ধী ও তৃতীয় শ্রেণীর এক ছাত্রী ধর্ষণের শিকার হয় । উপজেলার পিয়ারপুর ইউনিয়নের তাজপুর এলাকার এক দৃষ্টি প্রতিবন্ধী (২০) বাড়িতে ডুকে তাজপুর গ্রামের মওলা বক্সের ছেলে লম্পট মুকুল (৩৬) জোর পুর্বক দৃষ্টি প্রতিবন্ধীকে ধর্ষণ করে। গত ৩ জুলাই একই দিন ফিলিপনগর ইউপির ইসলামপুর হাজীর এলাকায় ছৈরুদ্দিন (৫২) নামে একবৃদ্ধ লম্পট স্থানীয় সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের তৃতীয় শ্রেণীর ছাত্রীকে (৮) ধর্ষন করে। সর্বশেষ গত ৫ আগস্ট কুষ্টিয়ার ভেড়ামারা উপজেলার চাঁদগ্রাম ইউনিয়নের কোদালিয়া পাড়া এলাকায় ৩ বছরের শিশুকে চাচা আইনুল হক (৫৫) ধর্ষন কর। উপজেলার চাঁদগ্রাম ইউনিয়নের কোদালিয়া পাড়া এলাকায় শিশুটি নিজ বাড়ির উঠানে খেলা করছিল। হঠাৎ বিদ্যুৎ চলে গেলে এ সময় ওই এলাকার চাচা আইনুল হক (৫৫) বাড়ির পাশে কোদারিয়া পাড়া এলাকার জাহাঙ্গীরের মেয়ে শিশুটিকে চাচা আইনুল হক কোলে করে ঘরে তুলে নিয়ে ধর্ষন করে। কুষ্টিয়ায় একর পর ধর্ষনের শিকার হলেও অপরাধীরা থেকে যাচ্ছে ধরা ছোঁয়ার বাইরে। আবার এদর মধ্যে নাম মাত্র ধরা পড়লেও আইনের ফাকগলে সহজেই বের হয়ে যাচ্ছে।