কুষ্টিয়ার ভেড়ামারায় পিতার থাপ্পড়ে পুত্রের মৃত্যু
কুদরতে খোদা সবুজ, কুষ্টিয়া :
কুষ্টিয়ার ভেড়ামারায় পিতার থাপ্পড়ে ৩য় শ্রেনীতে পড়–য়া সিদাম হলদার (১০) নামের এক ছাত্রের মৃত্যু হয়েছে। সে ভেড়ামারা উপজেলার কাঠেরপুল এলাকার ভোলানাথ হলদারের পুত্র এবং ভেড়ামারা সাতবাড়ীয়া মডেল সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ছাত্র। রবিবার ভোর রাতে কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় সে মারা যায়। পুলিশ ও নিহতের পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, শনিবার সকালে লেখাপড়ার সময় পিতা ভোলানাথ হলদার রাগের বশবর্তী হয়ে পুত্রকে থাপ্পড় মারে। এ সময় পাশ্ববর্তী ওয়ালে ধাক্কা খেয়ে গুরুত্বর আহত হয় পুত্র সিদাম। এরপর তাকে মুমুর্ষ অবস্থায় কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করে। পরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় সে মারা যায়। পুলিশ কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতাল থেকে লাশ উদ্ধার করে মর্গে প্রেরন করেছে।
কুষ্টিয়ার খোকসায় বন্দুকযুদ্ধে গণমুক্তিফৌজ প্রধান নিহত
কুদরতে খোদা সবুজ, কুষ্টিয়া :
কুষ্টিয়ার খোকসায় পুলিশের সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে চরপপন্থী সংগঠন গণমুক্তিফৌজের আঞ্চলিক নেতা ও বাহিনী প্রধান ফজলুর রহমান ফজু (৩৫) নিহত হয়েছে। রোববার ভোর পৌনে ৪ টার দিকে খোকসার উথুলিয়া ব্রিজের কাছে এ বন্দুক যুদ্ধের ঘটনা ঘটে। পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে আগ্নেয়াস্ত্র ও গুলি উদ্ধার করেছে। পুলিশ জানায়, ভোর পৌনে ৪টার দিকে ফজলু উথুলিয়া ব্রিজের কাছে তার দলবল নিয়ে কোনো নাশকতা সৃষ্টির লক্ষ্যে গোপন বৈঠক করছিলো। কুষ্টিয়া গোয়েন্দা পুলিশের একটি দল এমন সংবাদ পেয়ে সেখানে অভিযান চালায়। এসময় ফজলু ও তার দলবল পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে পুলিশকে লক্ষ্য করে গুলি চালায়। পাল্টা গুলি চালায় পুলিশও। এভাবে প্রায় আধাঘণ্টা ধরে চলা বন্দুকযুদ্ধে ফজলু ঘটনাস্থলেই নিহত হয়। এ সময় ঘটনাস্থল থেকে পুলিশ একটি নাইন এমএম পিস্তল, একটি রিভলবার, একটি পাইপগান ও দুটি এলজি, একটি চাপাতি, একটি রামদা ও বিভিন্ন অস্ত্রের ২০ রাউন্ড গুলি উদ্ধার করে। খোকসা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হরেন্দ্রনাথ সরকার ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, ফজলু কুষ্টিয়ার খোকসার আলোচিত ইউনিয়ন চেয়ারম্যান নূরুল ইসলাম হত্যা মামলার প্রধান আসামি। সে চরমপন্থী সংগঠন গণমুক্তিফৌজের নেতা টিক্কার সেকেন্ড ইন কমান্ড। তিনি আরও জানান, তাছাড়া ফজলু নিজেই একটি শক্তিশালী বাহিনী পরিচালনা করত। তার বিরুদ্ধে বিভিন্ন থানায় হত্যাসহ অর্ধডজন মামলা রয়েছে। ফজলু কুষ্টিয়ার কুমারখালী উপজেলার যদুবয়রা গ্রামের ফয়জুদ্দিনের ছেলে।
কুষ্টিয়ার দৌলতপুর সীমান্তে বিএসএফ’র হাতে বাংলাদেশী কিশোর আটক
কুদরতে খোদা সবুজ, কুষ্টিয়া :
কুষ্টিয়ার দৌলতপুর সীমান্তে (বিএসএফ)এর হাতে এরশাদ আলী (১৫) নামে এক বাংলাদেশী রাখাল আটক হয়েছে। রোববার সকাল ৮টার দিকে উপজেলার প্রাগপুর ইউনিয়নের জামালপুর সীমান্ত এলাকা থেকে তাকে আটক করে বিএসএফ। বিজিবি ও এলাকাবাসী জানান, সীমান্ত সংলগ্ন জামালপুর গ্রামের হামেদ আলীর ছেলে এরশাদ আলী ১৫৩-৫(এস) সীমান্ত পিলার সংলগ্ন এলাকায় মাথাভাংগা নদীর ওপারে ঘাস কাটতে গেলে পশ্চিমবঙ্গের নদীয়া জেলার হোগলবেড়িয়া থানার নাসিরা পাড়া ক্যাম্পের টহলরত বিএসএফ তাকে আটক করেছে নাসিরা পাড়া ক্যাম্পের টহলরত বিএসএফ তাকে আটক করে ক্যাম্পে নিয়ে যায়। এ বিষয়ে ৩২ ব্যাটালিয়ন অধিনস্থ জামালপুর বিজিবি ক্যাম্পের অধিনায়ক নায়েক সুবেদার আব্দুল মালেক জানান, ভারত ভূ-খন্ডে ঘাস কাটার সময় এরশাদ আলী নামে এক রাখাল ভারতীয় সীমান্ত রক্ষী বাহিনী বিএসএফ’র হাতে আটক হয়েছে। তাকে ফেরত চেয়ে বিএসএফকে চিঠি দেয়া হয়েছে।
কুষ্টিয়া ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে ফের নিয়োগ বাণিজ্যের মচ্ছব
কুদরতে খোদা সবুজ, কুষ্টিয়া :
কুষ্টিয়া ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে (ইবি) ফের নিয়োগ বাণিজ্যের মচ্ছব চলছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের বাতাসে উড়ছে নিয়োগ বাণিজ্যের টাকা। বিশ্ববিদ্যালয়ের আসন্ন সিন্ডিকেট সভার নিয়োগকে উপলক্ষ করে প্রশাসনের কর্তাব্যক্তিরা এখন বাতাসে ওড়া সে টাকা ধরতে ব্যস্ত। বাণিজ্যে পিছিয়ে নেই ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরাও। গত বছর সিন্ডিকেটে গণনিয়োগকে কেন্দ্র করে ছয় মাস অচল ছিল বিশ্ববিদ্যালয়টি। ফলে দুর্নীতিবিরোধী শিক্ষক-ছাত্রদের সর্বাতœক আন্দোলনে পদচ্যুত হয়েছেন ভিসি, প্রো-ভিসি, ট্রেজারার, প্রক্টর ও ছাত্র উপদেষ্টা। নতুন প্রশাসনও একই পথে হাঁটার কারণে সরকারের শেষ সময়ে এসে আবারও অচলাবস্থার দিকে যাচ্ছে ক্যাম্পাস। এ নিয়ে রীতিমতো ক্ষুব্ধ ও শঙ্কিত সাধারণ শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা। সূত্র মতে, চলতি মাসের শেষের দিকে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের ২১৮তম সিন্ডিকেটের সভা অনুষ্ঠিত হবে। এই সভাকে কেন্দ্র করে প্রশাসনের সর্বস্তরে চলছে নিয়োগের তোড়জোড়। এরই মধ্যে ৫টি বিভাগে শিক্ষক নিয়োগে নির্বাচনী বোর্ড অনুষ্ঠিত হয়েছে। এসব বিভাগের নিয়োগ বিজ্ঞপ্তিতে কেবল অস্থায়ী শিক্ষকদের স্থায়ী করার কথা থাকলেও নিয়ম বহির্ভূতভাবে কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগে ৬ জন, ইনফরমেশন অ্যান্ড কমিউনিকেশন ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগে ২ জন, বায়োটেকনোলজি অ্যান্ড জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগে ৪ জন, বাংলা বিভাগে ৪ জন নতুন শিক্ষক নিয়োগের সুপারিশ করা হয়েছে। ফিন্যান্স অ্যান্ড ব্যাংকিং বিভাগের শিক্ষক নিয়োগের নির্বাচনী বোর্ড অনুষ্ঠিত হলেও বোর্ডের সিদ্ধান্ত স্থগিত রাখা হয়েছে। ফিন্যান্স অ্যান্ড ব্যাংকিং বিভাগের ওই বোর্ডে ট্রেজারার মোটা অংকের ঘুষের বিনিময়ে ইভিনিং থেকে মাস্টার্স পাস করা পঞ্চাশোর্ধ্ব বয়সের অযোগ্য ও বিতর্কিত এক প্রার্থীর পক্ষাবলম্বন করেন বলে জানা গেছে। আগামী কয়েক দিনের মধ্যে পরিসংখ্যান বিভাগ, আইন ও মুসলিম বিধান বিভাগসহ কয়েকটি বিভাগের শিক্ষক নিয়োগের নির্বাচনী বোর্ড অনুষ্ঠিত হবে। এসব নির্বাচনী বোর্ডে শিক্ষক নিয়োগের জন্য মোটা অংকের আর্থিক লেনদেন হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের শীর্ষ কর্তাব্যক্তিদের ৫ থেকে ১৫ লাখ টাকা দিয়ে ম্যানেজ করে অযোগ্য ও দুর্বল একাডেমিক রেজাল্টধারীরা শিক্ষক হচ্ছেন বলে শোনা যাচ্ছে। অনেক ক্ষেত্রে টাকার কাছে হার মেনেছে দলীয় আদর্শের মেধাবী প্রার্থীও। ফিন্যান্স অ্যান্ড ব্যাংকিং বিভাগের শিক্ষক আসাদুজ্জামান চাকরি দেয়ার কথা বলে ৫ লাখ টাকা ঘুষ নিয়েছেন বলে এক প্রার্থী ভিসির কাছে লিখিত অভিযোগও করেছেন। বাংলা বিভাগে শিক্ষক নিয়োগের ক্ষেত্রে চারটি প্রথম শ্রেণীপ্রাপ্ত প্রার্থীকে বাদ দিয়ে অযোগ্য ও দুর্বল রেজাল্টধারী ৪ জনকে শিক্ষক নিয়োগের সুপারিশ করা হয়েছে বলে খোদ ওই বিভাগের ১০ শিক্ষক সংবাদ সম্মেলন করে অভিযোগ করেছেন। এসব বিভাগেই নতুন নিয়োগের কোনো সার্কুলার না দিয়েই অবৈধভাবে শিক্ষক নিয়োগ দেয়া হচ্ছে। বিভাগগুলোতে অস্থায়ী শিক্ষকদের স্থায়ী করা হবে মর্মে সার্কুলার দেয়া হয়েছিল। নতুন শিক্ষক নিয়োগের জন্য বিভাগের প্লানিং কমিটির মতামত ছাড়াই এসব শিক্ষক নিয়োগ দেয়া হচ্ছে। অনেক ক্ষেত্রে শিক্ষা ছুটিতে থাকা সিনিয়র শিক্ষকদের বিপরীতে নতুন শিক্ষক নিয়োগ দেয়া হচ্ছে, যা বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের সম্পূর্ণ নিয়মবহির্ভূত। বাংলা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক সাইফুজ্জামানের বিপরীতে নতুন একজনকে প্রভাষক পদে নিয়োগ দেয়া হয়েছে। শিক্ষা ছুটিতে থাকা ওই শিক্ষক ফিরে এলে তার কী হবে এই প্রশ্ন তুলেছেন বাংলা বিভাগের সিনিয়র শিক্ষকরা। ইনফরমশেন অ্যান্ড কমিউনিকেশন ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগ, বায়োটেকনোলজি অ্যান্ড জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগ ও ফিন্যান্স অ্যান্ড ব্যাংকিং বিভাগে শিক্ষক নিয়োগের ক্ষেত্রেও মোটা অংকের লেনদেনের অভিযোগ উঠেছে। এ বিষয়ে শিক্ষক সমিতির সভাপতি প্রফেসর ড. নজিবুল হক ও সাধারণ সম্পাদক প্রফেসর ড. ইকবাল হোসাইন বলেন, যে কয়েকটি বিভাগে নতুন শিক্ষক নিয়োগের সুপারিশ করা হয়েছে তার সবগুলো অবৈধ। প্লানিং কমিটির সুপারিশ ছাড়াই নতুন শিক্ষক নিয়োগের সুপারিশ করা হয়েছে। আমরা ভিসিকে বার বার বলেছি নিয়মের মধ্যে থেকে অস্থায়ীদের স্থায়ী করতে। এ বিষয়ে ভিসি প্রফেসর ড. আবদুল হাকিম সরকার অবৈধ লেনদেনের অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, শিক্ষক নিয়োগের ক্ষেত্রে যোগ্যতাকে প্রাধান্য দেয়া হয়েছে। অস্থায়ীদের স্থায়ী করার বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে নতুন নিয়োগ দেয়ার সংস্কৃতি এ বিশ্ববিদ্যালয়ে রয়েছে।