মোঃ ফুয়াদ মন্ডল, গাজীপুর জেলা প্রতিনিধি : গাজীপুর জেলার কালীগঞ্জে হা-মীম গ্রুপের রিফাত গার্মেন্টসে শতাধিক শ্রমিক হঠাৎ অসুস্থ্য হয়ে পড়ে। ১৯ সেপ্টেম্বর মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ৯টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। এ সময় ওই কারখানায় বিশৃঙ্খলা দেখে দিলে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন। পরে কারখানা কর্তৃপক্ষ ওইদিন গার্মেন্টস ছুটি ঘোষণা করেন। এ ঘটনায় গাজীপুরের ভারপ্রাপ্ত জেলা প্রশাসক জামিল আহমেদের নির্দেশে ৪ সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।
এদিকে অসুস্থ্য শ্রমিকদের কালীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে গিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসকরা হিমসিম খায়। এ সময় রোগীর স্বজনরা হড্ডগুল সৃষ্টি করলে উপজেলা নির্বাহী অফিসার খন্দকার মু. মুশফিকুর রহমান, উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. সোহাগ হোসেন, থানার অফিসার ইনচার্জ মো. আলম চাঁদ, মেয়র মো. লুৎফুর রহমান উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে গিয়ে পরিস্থিতি শান্ত করেন এবং রোগীদের সঠিক চিকিৎসার ব্যাপারে স্বজনদের আশ্বাস প্রদান করেন। পরে বেশকিছু রোগী সুস্থ্য হয়ে বাড়ী ফিরে যান।
এ ব্যাপারে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক রিফাত গার্মেন্টসের একাধিক শ্রমিকের সাথে কথা বলে জানা গেছে, কারখানার সুইং সেকশনে কর্মরত সুপারভাইজার মকবুল হোসেন (৩৫) সোমবার দুপুর পর্যন্ত কাজ করে লাঞ্চে যান। ফিরার পরে কাজে যোগ দিয়ে অসুস্থ্য অনুভব করলে ওই সেকশনের প্রশাসনিক কর্মকর্তা মেহেদী হাসানের কাছে ছুটি চান। তিনি তাকে ছুটি না দিয়ে ফিরিয়ে দেন। এর কিছুক্ষণ পর সুপারভাইজার অসুস্থ্য হয়ে ফ্লোরে লুটে পড়েন। এ সময় কারখানায় অন্য কোন যানবাহন না থাকায় কারখানার নির্বাহী পরিচালক মেজর (অব.) মো. মনিরুজ্জামানের গাড়ী চাইলে তিনি তা দিতে অস্বীকৃতি জানান। পরে প্রায় হাফ কিলোমিটার রাস্তা তাকে কোলে করে মূল সড়কে আনে শ্রমিকরা। সেখান থেকে ইজিবাইকে কালীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায়। কর্তব্যরত চিকিৎসক পরীক্ষা-নিরিক্ষা করে তাকে মৃত ঘোষনা করেন। এ খবর কারখানায় ছড়িয়ে পড়লে অন্য শ্রমিকরা উত্তেজিত হয়ে ইডি মো. মনিরুজ্জামানের উপর চড়াও হন। পরে কর্মকর্তারা শ্রমিকদের সাথে কথা বলে পরিস্থিতি স্বাভাবিক করে কাজে ফিরিয়ে নেন।
গাজীপুরের ভারপ্রাপ্ত জেলা প্রশাসক জামিল আহমেদ জানান, ঘটনার পর মঙ্গলবার দুপুরে হাসপাতাল এবং হা-মীম গ্রুপের ওই কারখানা পরিদর্শণ করেছেন। এ ঘটনায় অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিষ্ট্রেট (এডিএম) রায়হানুল ইসলামকে প্রধান করে ৪ সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে বলেও জানান তিনি। কমিটির অন্য সদস্যরা হলেন-ইউএনও খন্দকার মু. মুশফিকুর রহমান, ওসি আলম চাঁদ, ইউএসও (ভারপ্রাপ্ত) ছাকেদুর রহমান।