স্টাফ রিপোর্টার, ১৫ মার্চ, বিডিটুডে ২৪ডটকম : দিন দিন বেড়েই চলছে দেশের রাজনৈতিক সহিংসতা। বাড়ছে প্রাণহানি। ভোগান্তিতে পড়ছেন সাধারণ মানুষ। এসব সহিংসতার মূলে রয়েছে দেশের বড় দুই রাজনৈতিক দলের ক্ষমতাকেন্দ্রিক রাজনৈতিক চরিত্র। এমনটাই মনে করেন বিশ্লেষকরা৷
গত বছর বাংলাদেশে রাজনৈতিক সহিংসতা এবং সংঘাত সংঘর্ষে নিহত হয়েছেন ১৬৯ জন৷ আহত হয়েছেন ১৭ হাজার ১৬১ জন৷ সংঘাতের ঘটনা ঘটেছে ছোট-বড়, স্থানীয়-জাতীয়, অভ্যন্তরীণ অথবা দুই বড় দলের মধ্যে কম বেশি এক হাজার৷ চলতি বছরের প্রথম আড়াই মাসেই নিহত হয়েছেন ১২০ জন৷ ২৮ ফেব্রুয়ারি থেকে ৫ মার্চ পর্যন্ত নিহত হয়েছেন ৯৮ জন৷ মানবাধিকার সংগঠন অধিকারের হিসেব থেকে এ তথ্য জানা গেছে৷
কিন্তু বিশ্লেষকরা ২৮ ফেব্রুয়ারি থেকে ৫ মার্চ পর্যন্ত সহিংসতাকে প্রচলিত রাজনৈতিক সহিংসতার মানদণ্ডে বিচার করতে চান না৷ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের অধ্যাপক হাফিজুর রহমান মনে করেন, জামায়াত নেতা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর মৃত্যুদণ্ডের রায়ের পর যে সহিংসতা তা পরিকল্পিত৷ সেখানে মূলত জামায়াত-শিবির মৃত্যুদণ্ডের রায় বাতিলের দাবিতে সরাসরি পুলিশের সঙ্গে সংঘাতে জড়িয়ে পড়ে৷ তারাও যেমন এর শিকার হয়েছেন, তেমনি পুলিশ এবং সাধারণ মানুষও এর শিকার হয়েছেন৷ তবে পুলিশ হয়তো আরো একটু কৌশলী হতে পারত৷
মানবাধিকার সংগঠন আইন ও শালিস কেন্দ্রের পরিচালক নূর খান বলেন, এই সংঘাতে সবচেয়ে নেতিবাচক রাজনীতির প্রকাশ ঘটেছে৷ চাঁদে সাঈদীর ছবি দেখা গেছে- আধুনিক যুগেও এমন গুজব ছড়িয়ে সংঘাত বাধান হয়েছে৷ আর ব্যবহার করা হয়েছে ধর্মকে৷ যা প্রমাণ করছে রাজনৈতিক গোষ্ঠী তাদের স্বার্থে ধর্মকে এখনো যথেচ্ছ ব্যবহার করে৷
তারা বলেন, প্রচলিত রাজনৈতিক সংঘাত অনেকটা ক্ষমতাকেন্দ্রিক৷ বাংলাদেশের রাজনীতির যা চরিত্র, তাতে সরকারের শেষ দিকে রাজনৈতিক সংঘাত বাড়ে৷ বিরোধীদল চায় সরকারকে দুর্বল করতে৷ আর সরকার চায় বিরোধীদলের আন্দোলন দমন করতে৷ ফলে সংঘাত অনিবার্য হয়৷
অধ্যাপক হাফিজুর রহমান মনে করেন, এতে দেশের যেমন ক্ষতি হয়, সাধারণ মানুষও পড়েন বিপাকে৷ তাই সরকার ও বিরোধী দল উভয়কে দায়িত্বশীলতার পরিচয় দেয়া উচিত৷ বিরোধীদলের উচিত সরকারকে তার মেয়াদ পূরণ করতে দেয়া৷ আর সরকারেরও উচিত ক্ষমতা কুক্ষিগত করার কোন চেষ্টা বা ইঙ্গিত না দেয়া৷ নূর খান বলেন, রাজনীতিতে পারস্পরিক শ্রদ্ধাবোধ থাকা প্রয়োজন৷ প্রয়োজন বিরোধী মতকে সম্মান দেয়া৷ তা না হলে সংঘাত থামান কঠিন৷