ব্রেকিং নিউজ
Home | সারা দেশ | আগৈলঝাড়ায় শারদীয় দুর্গাপূজা উপলক্ষে ব্যস্ত সময় পার করছেন প্রতিমা শিল্পীরা

আগৈলঝাড়ায় শারদীয় দুর্গাপূজা উপলক্ষে ব্যস্ত সময় পার করছেন প্রতিমা শিল্পীরা

অপূর্ব লাল সরকার, আগৈলঝাড়া (বরিশাল) থেকে : কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের কবিতার মতই এই ভাদ্র শেষে আশ্বিনে শুরু হবে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের প্রধান ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দূর্গাপূজা। তাই তো ‘আশ্বিনের মাঝামাঝি উঠিল বাজনা বাজি, পূজার সময় এল কাছে’ সনাতন ধর্মাবলম্বীদের ঘরে ঘরে চলছে দেবী দুর্গার আগমণী বার্তা। আর কিছুদিন পর শুরু হতে যাচ্ছে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের বড় উৎসব শারদীয় দুর্গাপূজা। দেবী দুর্গাকে স্বাগত জানাতে মূর্তি তৈরিতে ব্যস্ত সময় পার করছেন আগৈলঝাড়ার প্রতিমা শিল্পীরা। মূলত: আনুষ্ঠানিকভাবে মহালয়ার দিন থেকে দেবীর আগমনী উৎসব শুরু হয়। আর পাল বা প্রতিমা শিল্পীদের গৃহে ইতিমধ্যে দেবী দুর্গার মূর্তি বানানো একেবারে শেষ পর্যায়ে। তাই প্রচন্ড ব্যস্ত সময় পার করছেন প্রতিমা শিল্পীরা। মূর্তির মূল কাঠামো তৈরি করা হয়েছে শ্রাবণ মাসের শুরু থেকেই। এখন চলছে মাটির প্রলেপের কাজ। সময় যত ঘনিয়ে আসছে ততই বাড়ছে প্রতিমা শিল্পীদের ব্যস্ততা। আগামী ১৯ সেপ্টেম্বর মহালয়া, ২৬ সেপ্টেম্বর মহাষষ্ঠী পূজা। মন্ডপ থেকে মন্ডপে বেজে উঠবে ঢাক-ঢোল আর কাঁসরের শব্দ। পাঁচদিনের উৎসবের পর ৩০ সেপ্টেম্বর প্রতিমা বিসর্জনের পর ঘটবে এর সমাপ্তি। বরিশালের আগৈলঝাড়া উপজেলায় এবছর ১৪১টি মন্ডপে দশভূজা দেবী দুর্গার পূজা সাড়ম্বরে অনুষ্ঠিত হবে। এই মন্ডপগুলোর দেবী দুর্গার প্রতিমা তৈরির কাজ করছেন স্থানীয় পাল বা প্রতিমা শিল্পীরা। স্থানীয় প্রতিমা শিল্পী লিটন পালের সাথে কথা বলে জানা গেল, তিনি ও তার পিতা কানাই পাল এবছর ২০টি প্রতিমার কাজ করছেন। তারা বংশপরম্পরায় এ কাজ করে আসছেন। প্রতিটি প্রতিমা তৈরির জন্য সাইজ ও ডিজাইন অনুপাতে পারিশ্রমিক নিচ্ছেন ১৫ হাজার টাকা থেকে শুরু করে ৫০ হাজার টাকা পর্যন্ত। তারা আগৈলঝাড়া উপজেলা ব্যতীত শরীয়তপুর, মাদারীপুর, ঝালকাঠি, কুয়াকাটাসহ অন্যান্য জায়গায় বিভিন্ন সময় বিভিন্ন পূজার প্রতিমা তৈরি করে আসছেন। আগৈলঝাড়া উপজেলার বিভিন্ন পূজামন্ডপ ঘুরে দেখা গেল, ছন-বাঁশের কাঠামোতে মাটির ঢেলা ভেঙ্গে জল মিশ্রিত করে প্রলেপ দিয়ে তৈরি করা হচ্ছে প্রতিমা। পাশেই একটি কাঠের চৌকির উপর শুকানোর জন্য রাখা হয়েছে দেবী দুর্গাসহ বিভিন্ন চরিত্রের মুখমন্ডল। অত্যাচারী অসুরের মুখমন্ডলের হিং¯্রতা ম্লান হয়ে যাচ্ছে দেবী দুর্গার মুখমন্ডলের প্রফুল্ল হাসির শুভ্রতায়। আবেগ, ভালবাসা, শুদ্ধতা দিয়ে মাটির ঢেলাকে দেবী দুর্গায় রূপান্তর করছেন প্রতিমা শিল্পী লিটন পাল ও তার পিতা কানাই চন্দ্র পাল। তারা বলেন, আমাদের কারিগরদের জন্য দুর্গাপূজা সন্নিকটে ও হাতে সময় কম থাকায় বিভিন্ন স্থানে গিয়ে মাটির প্রলেপের কাজ শেষে ফিনিশিং দিতে হবে। তাছাড়া আমরা এই রোদ এই বৃষ্টির কারণে মূর্তি শুকানো নিয়ে প্রচন্ড ঝামেলায় আছি। মূর্তিগুলো ভালভাবে শুকানোর পরে রং এর কাজ করতে হবে।
এছাড়াও আগৈলঝাড়া উপজেলার বিভিন্ন পূজামন্ডপে গিয়ে কথা হয় রনজিৎ পাল, বলাই পাল সহ অন্যান্য প্রতিমা শিল্পীদের সাথে। তাদের কাছ থেকে জানা গেল আগৈলঝাড়া উপজেলার প্রায় ২৫-৩০ জন প্রতিমা শিল্পী প্রতিমা তৈরির কাজে ব্যস্ত সময় পার করছেন। এ বিষয়ে আগৈলঝাড়া উপজেলা পূজা উদ্যাপন পরিষদের সভাপতি সুনীল কুমার বাড়ৈ বলেন, এ বছরও আগৈলঝাড়ায় বরিশাল বিভাগের মধ্যে সর্বোচ্চ ১৪১টি মন্ডপে দুর্গাপূজা অনুষ্ঠিত হবে। তিনি আরও বলেন- উপজেলা পূজা উদ্যাপন পরিষদের উদ্যোগে সরকারের পক্ষ থেকে সকল মন্ডপে সর্বাধিক সহযোগিতা করা হবে।
আগৈলঝাড়া থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আ. রাজ্জাক মোল্লা বলেন, সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সব থেকে বড় ধর্মীয় অনুষ্ঠান শারদীয় দুর্গাপূজা। এই পূজাতে কোন ধরণের অপ্রীতিকর ঘটনা বরদাশত করা হবেনা। অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে থানা পুলিশের পাশাপাশি প্রতিটি মন্ডপে আনসার-ভিডিপি ও গ্রাম পুলিশসহ স্বেচ্ছাসেবী সদস্যবৃন্দ থাকবে। তিনি আরও বলেন সকল ধরণের অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে আগৈলঝাড়া থানা পুলিশ বড় তৎপর। এবারের শারদীয় দুর্গাপূজায় কোন ধরণের অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটবে না বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।

 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

*

x

Check Also

মদনে আনসার ও ভিডিপির উপজেলা সমাবেশ অনুষ্ঠিত

সুদর্শন আচার্য্য, মদন (নেত্রকোণা) ঃ নেত্রকোণার মদনে বুধবার (৩০শে নভেম্বর) সকালে উপজেলা ...

মগড়া নদীর ভাঙ্গনে বিলীনের পথে বেশ কয়েকটি পরিবারের বসত ভিটে ও ঘরবাড়ি

সুদর্শন আচার্য্য, মদন (নেত্রকোণা) ঃ নেত্রকোণা মদন পৌর সদরের ১,২,৩,৮ ও ৯নং ...